সুনীলের জন্মদিনে নীরা
-প্রণব ভট্টাচার্য্
সুনীলের সেই নীরা সেদিন
হঠাৎ দেখা রেশন লাইনে
বেণীমাধব রীনা দিদি
তাঁদের যে আর খবর পাইনে?
কেমন আছে গোঁসাই কবির
বেণীমাধব সুলেখা দি
এখনও কি নীরার কথা
ভাবেন সুনীল নিরবধি?
দেখা হলে বলো দাদা নীরা
তার আগের মত
রেশন তোলে বাজারে যায়
শুকিয়ে গেছে মনের ক্ষত।
আবোলতাবোল কবিতাবলী
✍ সাইদুজ্জামান
চাঁদ ছিল মেখে
মেঘে ছিল লেগে , চাঁদ ছিল মেখে, খরজলে,
করতল আমি, রেখেছি তোমার, করতলে।
প্রেমের শহর টরন্টো
এই শহরে সবই আছে, সুন্দর সব বাড়ি,
ধুতি লুঙ্গি, শাড়ি ব্লাউজ, রয়েছে রুশ নারী।
নদীও আছে, সবুজ দ্বীপ, সারিবদ্ধ গাড়ি,
আছে মুক্তো ছড়ানো উলুবনে যে হায়,
এ ভালোবাসা দেখি সবই, প্রায় সবই খায়।
_________________________________________________________________
ও রানি, আমাকে দাও হাত দুখানি
লোকেরা ভুল বকছে আছে নাকি হাতের খুব কাছেই সুখ,
নীল সাগরে, দূর পাহাড়ে, ফোনের কাচে , প্রিয় নারীর মুখ।
এইতো নাকি সুখে থাকার গোপন চাবি, স্বর্গ বাড়ি খুব,
ও-সুখ আছে নাকি সময় তোমার আজ, দুজন দিতে ডুব?
নামটি তার ডাকতে মিঠে, বইতে পিঠে, বুকের কাছে টানি,
সইতে নারি দুঃখ যত, আমার মতো, এই দীনের রানি।
__________________________________________________________________
তাকে চাই এক্ষুনি
মধ্যরাতে পদ্য আমি লিখি,
চঞ্চলতা গ্রাস করছে ঠিকই।
প্রেম পিরিতি, গড়ন কিছু শিখি,
বুঝবে ভেবে, আমার প্রেম, সে কি ?
চাই না আমি, আমাকে কেউ বুঝুক,
হিসেব ছাড়া ভালো আমায় বাসুক।
আমার সে কি? তাওতো নয়, তবু
আমার হবে খেলার সাথী কভু?
ভ্রমর কেন একলা কাঁপে টানা,
ভয়টা কীসে, করতে প্রেম মানা?
এই খেলাটা, খেলতে যদি আসো,
এখন তুমি, প্রেম-ভেলাতে ভাসো।
আমার চাই এক্ষুনিই, বোঝো?
দেরিতে নয়, সময় তুমি খোঁজো।
টরন্টো, সেপ্টেম্বর ০৮, ২০২২
____________________________________________________________
ছায়া আমার পায়ে পড়ছে বাঁধতে এ কী মায়া !
হঠাৎ কেন, উঠছে মন, চঞ্চলি?
পড়ছে মনে, অনিন্দিতা, কেবলি।
মুখচ্ছবি, কাশবনের, ফাঁকে,
পাই না পাই, দেখতে চাই, তাকে।
ঘুম পাড়াতে, ও চাঁদ তুমি, যাও,
তারই দেশে, চিঠি আমার, নাও।
একলা আমি, আঁকছি ছবি, তার,
দিন দুপুরে, ছটফটানি, সার।
স্বপ্নে সে কি, দেখছে নাকি, ছায়া?
পায়ে পড়ছে, বাঁধতে এ কী, মায়া !
ভুলে যেয়োনা, আনতে তার, ছবি
স্বপ্নে তার, বাস করে কি, কবি?
ফেরত পথে, ও চাঁদ তাকে বোলো,
আমার রাতে, বাসে যেন সে, ভালো।
টরন্টো, সেপ্টেম্বর ৬, ২০২২
________________________________________________________________
হ্রস্ব প্রেম
মুথা ঘাসের, মাদুর আছে, পাতা,
বসবে নাকি, আঁচল পেতে, রাধা ?
কোন ফুল, আনলে ভ'রে, অঞ্চল,
কোন গানেতে, করলে মন, চঞ্চল?
চোখ-গভীরে, ডুব সাঁতারে বহুদূর ,
গিয়েছি খুব, আনন্দ সমুদ্দুর!
ওখান থেকে, ফিরতে হলে, প্রাণ,
চলেই যাবে, বিনা তোমার ঘ্রান।
পাতার বাঁশি, বাজাতে আমি, পারি,
থাকলে পাশে, তোমার মতো, নারী।
দূরের তারা, আসলে কাছে, ভস্ম
তুমি যখন করতে পারো, হ্রস্ব,
প্রেমের আয়ু, জীবন বায়ু, অল্প,
ফুরিয়ে যাবে, আমাদের এ , গল্প?
টরোন্টো, সেপ্টেম্বর ৬, ২০২২
_________________________________________________________________
ও নন্দিতা, গান ধরো এক বড়ো
ও নন্দিতা, দূর শহরে, আছো তো তুমি, ভালো?
ইচ্ছে করে, টেলিস্কোপে, দেখি তোমার, আলো।
জানিতো সখী, ভালো করেই, তুমি আমার, নও,
তারই থেকো, তাই বলে কি, দেখতে মানা, কও?
গাছের ফুল, গাছেই তুমি, ইচ্ছে মতো, থেকো,
দূরের আলো, বাসতে ভালো, বুকের মাঝে, রেখো।
আমিতো আর, যাচ্ছি না, বাঁধাতে কোনো, গোল,
ভাব বাচ্যে, জানিয়ে দিও, পড়লে গালে, টোল।
পাঠিয়ে তুমি চোখের তারা, খোঁপায় ফুল, এঁকে,
বুঝতে দিলে, হাতেই বুঝি, টোল রেখেছো , ঢেকে।
ও নন্দিতা, গানটি ধরো, প্রেমের এক, বড়ো,
শুনবো আমি, শুনবে মাটি, নদী আকাশ, চূড়ো
টরন্টো, সেপ্টেম্বর ৪, ২০২২২
____________________________________________________________________
কোথাও তুমি আছো
বললো সবে, পাবেই প্রেম, তুমি,
প্রথম দেখা, পত্র লেখা, চুমি।
আমার শুধু, জানতে চাই, আছো,
কোথাও তুমি, শপথ করে, আজো,
বলতে পারি, এটুকু ছাড়া, আর,
চাইনা কিছু - চাই না কিছু, তার।
নীল আকাশে, সারস ওড়ে , ঢঙে,
হাঁটছি আমি, পাতা ঝরার, রঙে।
আমার শুধু, একটি ঝলক, দেখা,
তোমার মুখ, আর চিবুক, রেখা।
শপথ করে, বলছি আমি, শোনো,
এরচে বেশি, চাইনা কিছু, কোনো।
হাতটি দাও, একটি কথা, বলো,
যেখানে সুখ, সেইখানেতে, চলো।
তুমি আমার, উদ্বেগ ও, আরো,
একটি শুধু, প্রাপ্তি আছে, বড়ো।
আমার সাথে, একটি বার, এসো,
সারা জীবন, ভালো আমায়, বেসো।
টরন্টো, ২রা সেপ্টেম্বর, ২০২২
ড. ফেরদৌসী বেগমের একগুচ্ছ কবিতা
শ্রাবনের ঘোলা জলে........
আজ দক্ষিণা বাতাস
অন্য রকম এলোমেলো
বাঁধ ভেঙ্গেছে
লাগামবিহীন উড়ু উড়ু
ভেঙ্গেছে কি ঘর কারোর!
হাওয়ায় উড়া শুকনো পালক
সে কি জানে থামবে কখন
বন ময়ূরীর পালক যখন
পাবে হয়তো কেউ একজন।
দক্ষিণ কোণে কালো মেঘ
বারি ঝরে আজ ঝরো ঝরো
তানপুরাটা সুর তোলে
মন হারানোর আয়োজনে
এমন দিনে বিজন দ্বারে
কাউকে কি তোমার পড়ে মনে?
শ্রাবন ঘন বারিসনে
ঘোলাটে চোখে বিবর্ণ মুখ
ক্ষয়ে যাক সব বারিধারায়
ফিকে হয়ে আসে
জলে ভেসে যায়
তারপরও রয়ে যায়
ভিজে মাটিতে ফেলে যাওয়া
পায়ের ছাপ।
রাজশাহী/ ২৬.০৯.২০২২
*****************************************************************
মেঘ কেটে গেলে.....
এখানে আকাশ নীল বৃষ্টিস্নাত
খোঁয়া খোঁয়া মেঘ
ভেসে চলে অবিরত।
ওখানে মেঘ কালো অবগুন্ঠন
বেদনায় নীল
ঘোর অমানিশা।
কে যেনো বলে এসো না
কুহুকে না হোক
ভীরু বাতাসে খুলুক কপাট
এবেলার ভারী হাওয়া
গোধূলীতে মিলাক।
হেসে উঠুক রবি কেটে যাক মেঘ
খোলা আকাশ জানুক
মেঘেরা চলে গেলে
আপ্লুত পথিক গড়ে যায় নীড়
যেখানে বাবুই বেঁধেছিলো ঘর
কোন একদিন।
রাজশাহী
২২.০৯.২০২২
*****************************************************************
বৃষ্টির প্রতিধ্বনি......
তুমি এলেই বৃষ্টি নামে
শহর জুড়ে
স্বর্ণচাঁপা আরো হলুদ হয়,
বাতাসের প্রবাহ
হু হু করে বেড়ে যায়,
কনক চাঁপার পাপড়িগুলো
বেওয়ারিশ অশ্বের মতো ছোটে,
ভেজা কাঠ বিড়ালি কিছুই না বুঝে
গাছের ডালে ছুটাছুটি করে,
শান্ত নদীর জল বেড়ে যায়
ভেসে যায় একূল ওকূল
আরও কত কি যে ঘটে অলক্ষ্যে!
ছাতিম তলায় লাল শাড়ীতে
অপেক্ষারত এক উর্বসী
রিষ্ট ওয়াচে বার বার চোখ রাখে,
কপালের স্বেদ মুছে
ঠায় দাড়িয়ে চোখ রাখে
দুরপাল্লার চলমান জানালায়।
বৃষ্টি আসলেই অপেক্ষার প্রহর বাড়ে
হয়তো পা রেখেছো
এই শহরে অগোচরে
কোন এক পীচ ঢালা পথে
বৃষ্টির জলে প্রতিধ্বনি ভাসে।
রাজশাহী
১৭.০৯.২০২২
*****************************************************************
ছন্দ ছাড়া সুর.......
সুর ছাড়া বারি
দাড়ি ছাড়া বাড়ী
বিরাণ এ ভূমি
কেমন যেন উপোস উপোস লাগে।
আজকাল অন্ধকারটা গাঢ় হলে
মাঝ রাতের তাঁরাগুলোকে
খুব আপন লাগে
তাঁরাদেরও কি বৈরাগ্য হয়!
একাদশী চাঁদ হয়তো জানে
শুক্লাপক্ষের খবর
আমার জানা হয়নি।
তবুও আসা যাওয়া ছিলো
তাড়া ছিলো না
তাগিদ ছিলো না কোনো।
মেনি বিড়ালটা বোধ হয় জানতো
কুন্ডলিত দেহে অপেক্ষা করতো
তারপর ঘুমিয়ে যেতো।
জেগে থাকা জোছনায়
বেলকুনি ছেঁয়ে যায়
হাতে লেগে থাকে শিউলির ঘ্রাণ
শুক্লা পক্ষের চাঁদ জানে
যেতে হবে কতদূর
এই তো জীবন
জীবনের বাঁক কত বন্ধুর।
১৫.০৯.২০২২
রাজশাহী
ফেরিওয়ালা...............
সামিদা খাতুন
এই যে ভাই ফেরিওয়ালা
ঘুরে বাড়ি বাড়ি
কি করো কি ফেরি
শান্তি ফেরি করো শান্তি?
আছে কত উঁচু মহল
আছেন কত কোটি পতি
এতসব ছেড়ে কেন বোন
আমার কাছে তোমার এ মিনতি?
উঁচু মহলের সুউচ্চ ভবন
ইট কনক্রিট এ ঘেরা
বাহির থেকে জাঁকজমক যেমন
ভেতরে কেউই ভালো নেই তারা।
কোটিপতির আছে প্রচুর অর্থ-সম্পদ
পাশে নেই কো কেউ
কেউবা যদি যেতেও বা চায়
গেটে বাঁধা কুকুর করে ঘেউ ঘেউ।
কত নিয়মের বেড়াজালে আবদ্ধ তারা
নিজেকে রাখে কেমন গোপন
সুখ পেতে গিয়ে শান্তি হারায় তারা
নিজ হাতে অশান্তি করে রোপণ।
তোমার তো দেখি নেই নিয়ম কানুন
নেই কোন বাধা বিপত্তি
তাই বুঝি তোমার ডাকে ছুটে যায়
শিশু- কিশোর, গৃহবধু ও যুবতি।
কি করো কি ফেরি
শান্তি ফেরি করো ভাই শান্তি?
দু'জোড়া কবিতা
✍ গৌতম সাহা
আমার অসার দিন।
প্রেমহীন এ জীবন
শূন্য সময়
কেউ তো পেয়েছে প্রেম
কেউ বা হৃদয়
আমি তো জানিনা তার
কী যে সে চায়
দেয় না তো কোনোকিছু
কী-বা পরিচয়।
আমার অসার দিন
একা একা কাটে
কেউ বা পেয়েছে সুখ
মন বিনিময়।
প্রেমহীন এ জীবন
শূন্য সময়
দুঃখটা-ই ভালোবাসা
সুখ কিছু নয়।
- অধরা কালেকশন্।
০৮.০৯.২২।