টরন্টো, ৬ই মাঘ ১৪২৭ বঙ্গাব্দ, নভো সংখ্যা ১৬
              
হোমপেজ সম্পাদকীয় পাঠক পরিষদের কথা কবিতা ছোট গল্প ধারাবাহিক পাঠাগার আর্কাইভ লেখক পরিচিতি অনুবাদ বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও প্রকৌশল যোগাযোগ আবৃত্তি

কার্তিকের কুয়াশা

লেখক পরিচিতি


শায়লা আজীম



শায়লা আজীম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করেছেন। বর্তমানে নিউইয়র্ক শহরে বাস করছেন। তিনি দীর্ঘ ২৩ বছর ধরে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের নিয়ে কাজ করছেন। এই বিষয়ে তিনি অনেক পড়াশুনা করেছেন এবং তার স্বীকৃতি স্বরূপ অসংখ্য সনদপত্র অর্জন করেছেন। বাংলাদেশ এবং উত্তর আমেরিকা সহ বিশ্বের প্রায় চল্লিশটি দেশে বিভিন্ন প্রকল্পের সাথে প্রত্যক্ষভাবেই শায়লা আজীম জড়িয়ে আছেন। তাঁর এই মহৎ কাজের জন্য নিউয়র্ক মহানগরীতে তিনি সকলের শ্রদ্ধাভাজন।  

মনিজা রহমান



জন্ম ৯ মার্চ, বরিশালের পিরোজপুরে, নানাবাড়িতে। শৈশব, কৈশোর ও তারুণ্যের পুরো সময় কেটেছে পুরনো ঢাকার গেন্ডারিয়ায়। বিয়ের পরে দীর্ঘদিন থেকেছেন ঢাকার নিউ ইস্কাটন রোডে। দেশান্তরী জীবনে বাস করেছেন শুরুতে নিউইয়র্কর সিটির জ্যাকসন হাইটসে ও বর্তমানে এস্টোরিয়ায়। লেখকের লেখায় ঘুরে ফিরে এসেছে এসব স্থানের স্মৃতি। গেন্ডারিয়া মনিজা রহমান উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও সেন্ট্রাল উইমেন্স কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেন তিনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতিতে মাস্টার্স করার পরে বেছে নেন ক্রীড়া সাংবাদিকতার মতো নারীদের জন্য অপ্রচলিত এক পেশা। দীর্ঘ সময় কাজ করেছেন ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশন, দৈনিক জনকণ্ঠ ও দৈনিক মানবজমিনে। নিউইয়র্কে আসার পরেও নিজেকে যুক্ত রেখেছেন লেখালেখির সঙ্গে। প্রথম আলো উত্তরের নকশার বিভাগীয় সম্পাদক পদে দায়িত্ব পালন করছেন। পাশাপাশি শিক্ষকতা করছেন এস্টোরিয়ার একটি স্কুলে। বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র ও কণ্ঠশীলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন দীর্ঘদিন। ২০১০ সালে প্রথম বই প্রকাশিত হবার পরে এই পর্যন্ত তাঁর বইয়ের সংখ্যা বারোটি।
রওশন হক 


লেখক ও সাংবাদিক। রওশন হকের জন্ম হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাটে। লেখাপড়া করেছেন চট্টগ্রামে। ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি, চট্টগ্রাম থেকে এম বি এ করেছেন  স্বামীর উৎসাহ এবং সহযোগিতায়। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক করেছেন নাসিরাবাদ গার্লস স্কুল এন্ড কলেজ থেকে।  একই প্রতিষ্ঠান থেকে বিজ্ঞান বিভাগে স্নাতক। ব্যাংকার হিসাবে ১২ বছরের কর্মজীবন শুরু ১৯৯৭ সালে সাউথ ইস্ট ব্যাংকে। পরে কাজ করেছেন প্রিমিয়ার ব্যাংকে (২০০২-২০১৫)। স্বামী ও দুই মেয়ে নিয়ে ২০১৫ থেকে নিউইয়র্কবাসী। ছাত্রজীবন থেকেই সাহিত্যানুরাগী রওশন এখন নিউইয়র্কের সাপ্তাহিক 'প্রথম আলো, উত্তর আমেরিকা'য় নিয়মিত রিপোর্টিংয়ের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় ছোটগল্প সহ নিয়মিত নানা ধরণের লেখালেখি করছেন। 

সাইফ সিদ্দিকী


সাইফ সিদ্দিকী, লেখক, সাংবাদিক ও সংগঠক। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান রাজ্যে অধিবাসী, পেশায় গাড়ি প্রকৌশলী। জেনারেল মটরস, ফোর্ড ও ক্রাইস্লার, যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম তিন গাড়ি নির্মাণ প্রতিষ্ঠানে প্রকৌশলী হিসাবে কাজ করেছেন। বর্তমানে ফিয়েট-ক্রাইস্লার অটোমটিভ কোম্পানিতে কর্মরত।
অবসর সময়ে কবিতা আবৃত্তি চর্চা করেন। বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মঞ্চে আবৃত্তি ও উপস্থাপনায় তার সরব উপস্থিতি। এছাড়া ছাত্র জীবন থেকেই লেখালেখির সাথে জড়িত। বিবিসি বাংলা, প্রথম আলো, যুগান্তর, জাগো নিউজ, বাংলাদেশ প্রতিদিন, ডেইলি সান সহ বাংলাদেশের বিভিন্ন জনপ্রিয় সংবাদ পত্রে হয়ে কাজ করেছেন। ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সংগঠক হিসাবে মিশিগানে বাংলাদেশি কমিউনিটির কাছে জনপ্রিয় মুখ।

শিউলী জাহান


জন্ম: ১০আগস্ট। পৈতৃকসূত্র: মানিকগঞ্জ জেলা, সিঙ্গাইর থানা, পারিল গ্রাম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর।
সাংবাদিকতা দিয়ে পেশাজীবন এবং লেখালেখির জগতে প্রবেশ। জড়িত ছিলেন বেশ কিছু সাপ্তাহিক ও পাক্ষিক পত্রিকায়। প্রকাশিত হয়েছে দু’টি কাব্যগ্রন্থ –
আশার বাগানে নীল প্রজাপতি; দ্রোহের সাত রঙ। কবিতাই তার আরাধনা। কবিতার নিগড়ে বেঁধে থাকতেই পছন্দ করেন। তবে সব ধরণের লেখা ও পড়ার প্রতি আগ্রহী যাকিছু মন ও হৃদয়কে আন্দোলিত করে, ভাবনার সাগরে ঢেউ তোলে। প্রকৃতি ও মানুষ তার লেখার মূল বিষয়। বর্তমান নিবাস কানাডার টরন্টো শহরে। বর্তমানে কানাডার একটি প্রতিষ্ঠানে বিশ্লেষক (Analyst) হিসেবে কর্মরত আছেন।



ফিরোজা হারুন



জন্মঃ জানুয়ারি ১, ১৯৪৪, ময়মনসিংহ জেলার ত্রিশাল থানার হরিরামপুর গ্রামে। স্নেহময় পিতা জনাব আব্দুস সোবহান বিশ্বাস ও মাতা জুবাইদা খাতুনের ছায়ায় বেড়ে ওঠা।শিক্ষাঃ ময়মনসিংহ বিদ্যাময়ী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়। তারপর টাঙ্গাইলের কুমুদিনী কলেজ হতে বি.এ. পাশ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে ইতিহাসে এম. এ. সমাপ্ত করে ময়মনসিংহ টিচার্স ট্রেনিং কলেজ ফর উইমেন থেকে বি. এড. ডিগ্রী অর্জন এবং ঢাকায় আদমজী ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুলে যোগদান। এক কন্যা ও এক পুত্র সন্তানের জননী ফিরোজা হারুনের সাহিত্য অঙ্গনের অগ্রযাত্রার মূলে প্রেরণা যুগিয়েছে তাঁর স্বামী ডাঃ মোহাম্মদ হারুন। তাঁর প্রথম উপন্যাস 'জীবনেরে কে রাখিতে পারে' সাপ্তাহিক রোববারে ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশের পর ১৯৯৭ সালে গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়েছে। আর আন্তর্জালে প্রকাশ পেয়েছে ২০০৮ সালে। দ্বিতীয় প্রকাশিত উপন্যাস ২০০০ সালে 'সুখের লাগিয়া'। ২০০৮ এ প্রকাশিত হয়েছে আরো ছয়টি গ্রন্থ। কিশোর সংকলন -মেঘরাজা রোদরাজা, কাব্য সংকলন-নিশি লোর, উপন্যাস-প্রতীক্ষা, তিন পুরুষের গল্প, স্মৃতির দুয়ারে এবং গল্প ও প্রবন্ধ সংকলন-ছিন্ন বীণার তার। লেখালেখির পাশাপাশি তিনি সমাজকল্যাণ মূলক কাজে নিয়োজিত রয়েছেন। প্রতিষ্ঠা করেছেন তাঁর মায়ের স্মৃতিস্মরণে একটি প্রাইমারি স্কুল তাঁরই নিজ গ্রামে।


মধুবন্তী আইচ



জন্ম ২৯ মে, কোলকাতায়। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তুলনামূলক সাহিত্যে ডিগ্রি অর্জন করেন। বর্তমান নিবাস গুজরাটের ভাদোদরা শহরে।

গোলাম কিবরিয়া



গোলাম কিবরিয়া নিভৃতচারী একজন একজন সাহিত্য সেবক।আশৈশব কবিতা ভালোবেসেছেন।কবিতা লিখেছেন। কবিতার চর্চা করেছেন। কিন্তু প্রকাশ করায় তাঁর দারুণ অনিহা। নিজেকে সাহিত্যানুরাগী ভাবতে ভালোবাসেন। কবি বলতে তার খুবই আপত্তি। সে কারনে উল্লেখ যোগ্য সংখ্যায় কবিতা লিখলেও আজ অবধি কোন বই প্রকাশ করেননি।
পেশাগত জীবনে শিক্ষকতাকে বেছে নিয়েছিলেন প্রথম জীবনে। সময়ের প্রবাহে আজ উনি ব্যাবসায়ী।
ব্যক্তি জীবনে এক কন্যা সন্তানের জনক কিবরিয়া আশা করেন তাঁর সন্তানও বাংলা সংস্কৃতিকে ধারণ করে বেড়ে উঠবে। বর্তমান প্রজন্মের প্রতি উনি অনেক আশার আলো দেখতে চান।

ফরিদা ইয়াসমিন


"হাজার বছর ধরে আমি পথ হাঁটিতেছি পৃথিবীর পরে" দূরন্ত কিশোরী বেলায় ভীষন ভাবে মুগ্ধ ছিলাম কবিতার এই চরণে। ভাবতাম কবি আমায় হতেই হবে। কিছুটা বুঝে কিছুটা না বুঝে প্রায়ই পাঠ করতাম "বনলতা সেন" কবিতাটি। আরো কিছু পরে রবীন্দ্রনাথের কবিতায় নিমগ্ন হলাম। রবীন্দ্রনাথের কবিতায় সীমা থেকে অসীমের পানে যাত্রা, দেহ থেকে দেহাতীত প্রেম আমাকে নিয়ে গেল চিন্তা -চেতনার, মন-মননের এক ভিন্ন জগতে। সেই বিশাল, সীমাহীন ভুবনের সন্তরণ শেষ করে তীরে উঠা আর হয় না। বুঝতে পারি কবিতার ভুবনে আমার হাঁটা হবে না। কল্পনা গুলো কখনোই ডাল-পালা মেলে আর ছন্দে বাঁধা পরে না।
শখের বশে বিভিন্ন পত্রিকায় লেখা লেখি চলতে থাকে। "যায় যায় দিন "পত্রিকায় লিখতে খুব পছন্দ করতাম এক সময়। প্রবাসী হওয়ার পর নিউইয়র্কের বিভিন্ন বাংলা পত্রিকায় লিখছি অনিয়মিত। অনলাইন ভিত্তিক সংগঠন" পেন্সিলে "কিছু লিখছি ইদানিং। লেখার চেয়ে পাঠ করাটাই বেশী পছন্দের। তাই আবৃত্তি করি সময় পেলে।
বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে সম্মান ও মাষ্টার ডিগ্রি অর্জন করেছি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে। ব্যাক্তিগত জীবনে বড় কিছু হতে না পারলেও অনেক জ্ঞানী মানুষের সংস্পর্শে আসতে পেরেছিলাম।যারা ছিলেন আমার শিক্ষক। আমার জীবনের যা কিছু অর্জন সেতো সেই সব মহান ব্যাক্তিদের অবদান।

সাগর জামান


কবি,প্রাবন্ধিক,সাংবাদিক,শিল্প সমালোচক। জন্ম২৯ এপ্রিল১৯৭৪ মাগুরা । তার পিতার নাম এ কে এম হামিদুজ্জামান। মাতার নাম বেগম মাহমুদা মির্জা। সাগর জামান শৈশব থেকে লেখালেখি করছেন।
পারিবারিক পরিমণ্ডল থেকে তিনি পেয়েছেন সাহিত্যের খোঁজখবর নেয়ার পরিবেশ । বড় ভাইদের লেখালেখি দেখে তার এই আগুনে হাত পোড়ানোর সুত্রপাত। ছেলেবেলা থেকেই লেখালেখি শুরু করেন তিনি। তবে নব্বই দশকের শুরু থেকে সাগর জামানের নিবিড় সাংবাদিকতার সুচনা । সমকালের সমাজ বাস্তবতার নিরিখে নান্দনিক সমালোচনা স্পষ্ট কথন বিশ্লেষণধর্মী লেখালেখির মাধ্যমেই তিনি এই বুদ্ধিবৃত্তিক জ্ঞানভিত্তিক পেশাকে চলমান রেখেছেন।তিনি বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে লেখালেখি করেন। দৈনিক আজকের কাগজ,দৈনিক বাংলাবাজার পত্রিকা,দৈনিক যায়যায়দিন,দৈনিক ভোরের কাগজ,দৈনিক জনকণ্ঠ,প্রভৃতি পত্রিকায় বিস্তর লিখেছেন। সম্পাদনা করেছেন আলোকের এই ঝর্ণাতলে,অমল ধবল দিন,ফিরে আসি মাটির টানে,নীল আকাশ সোনালি রৌদ্র প্রভৃতি সাহিত্য কাগজ। মফস্বলে থেকে লিটল ম্যাগাজিন প্রকাশনার মাধ্যমে তিনি অনেক নামী কবি, লেখক,সাহিত্য সমালোচকদের বাহবা কুড়াতে সক্ষম হয়েছেন । সৃজনশীল প্রঞ্জার প্রতিফলন ঘটেছে তার লেখায়। তার সম্পাদনায়। মফস্বল থেকে প্রকাশিত সাহত্য কাগজে তিনি দেশের খ্যাতিমান কবি সাহিত্যিকদের যুক্ত করেছেন সাফল্যের সাথে। মফস্বলের প্রতিকূল পরিবেশে লিটল ম্যাগাজিন চর্চায় তিনি ছিলেন অগ্রগণ্য। সৃজনশীল রচনার পাপাশাশি সমালোচনামূলক লেখালেখিতেও তিনি স্বচ্ছন্দ বোধ করেন। স্বকীয় ভাষা বিন্যাস,প্রেমময় আবেগ, শিল্প সৌন্দর্যবোধ, প্রকৃতি, বাস্তবতা, মানবিক সামাজিক সব সংকট জীবনবোধ, দেশপ্রেম, স্বাধীনতার চেতনা, তার লেখালেখিতে পরিলক্ষিত হয় নানাভাবে। সাহিত্যের সব ক্ষেত্রে তার বিচরণ তার লেখক সত্তাকে মহিমান্বিত করেছে। তিনি যেমন গদ্য রচনার ক্ষেত্রে প্রশংসিত হয়েছেন তেমনি কবিতা রচনায় দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। তার বেশির ভাগ কবিতা নারী প্রেমের আবেগ অনুভূতি সংলগ্ন।
বৈপ্লবিক সময়কে যারা সাহিত্যে ধারণ করেছেন তাদের ঐশর্যমণ্ডিত জগৎ, সৃষ্টিশীলতা নানাভাবে সুবিন্যাস্ত করেছেন সাগর জামান তার বিভিন্ন প্রবন্ধে। সমষ্টির সংকট সংগ্রামী চেতনা, প্রেম প্রবণায় তার লেখালেখির অনাবিল ভুবন হয়ে উঠেছে বৈচিত্র্যময় । সাগর জামানের প্রবন্ধ গ্রন্থ 'আলোর অনাবিল ভুবন 'পাঠক মহলে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে।
বাংলা সাহিত্যকে উর্বর করেছেন খ্যাতিমান কবি সাহিত্যিক। তাদের জীবন দর্শন, দিক নির্দেশনা ও ভাবনা সাগর জামান তার প্রবন্ধ গ্রন্থ "আলোর অনাবিল ভুবন" এ গভীর অনুসন্ধানে বিশ্লেষণ করেছেন। তার রচনা যুক্তি নির্ভর ও তথ্য সমৃদ্ধ। বলা যায় কাল পরিক্রমায় এ সব কবি সাহিত্যিকদের জীবনবোধ তরুণ প্রজন্মকে নতুনভাবে উদ্দীপ্ত করবে। সাগর জামান সহজ সরল ভাষায় তার রচনায় স্বদেশকে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে যুক্ত করেছেন।

জেবুন্নেছা জোৎস্না

জন্ম - যশোর। যাপিত জীবনে, মননে ধারণ করেন
কবিতা। তবে গল্প ও প্রবন্ধ লেখায়ও সমান আগ্রহ। বাংলাদেশে ও প্রবাসের
বিভিন্ন বাংলা পত্রিকায় নিয়মিত লেখালেখি করেন। বর্তমান নিবাস যুক্তরাষ্ট্রের
নিউ ইর্য়কে। পেশা জীবনে একজন কার্ডিয়াক সনোগ্রাফার।

রওশন হাসান


রওশন হাসান (Roushan Hasan) । জন্ম ১৭ই জানুয়ারী, কুষ্টিয়া জেলায় । স্নাতকোত্তর : ইংরেজী সাহিত্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় । মূলতঃ ছেলেবেলা থেকেই কবিতা, ছড়া লেখা শুরু, নব্বই দশক থেকে নিয়মিত লিখতে শুরু করেন । দেশ-বিদেশে নানান পত্রিকা, ব্লগ ও লিটল ম্যাগাজিনে ইংরেজি ও বাংলায় লেখা প্রকাশিত হয়েছে । এযাবৎ পনেরটি কাব্যগ্রন্থ ও বেশ কয়েকটি যৌথ কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে । তিনি
আমলাতান্ত্রিক রক্ষণশীল পরিবারে বড় হয়েছেন ।
বাবা প্রাক্তন সচিব, সংস্থাপন মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ সরকার । বয়োসন্ধিকালে মাতৃবিয়োগ, স্বল্প বয়সে বিবাহ ও সন্তান, অনুজ ভাইবোনদের গুরু দায়িত্ব ও লেখাপড়ায় অনবসর কেটেছে কৈশোরত্তীর্ণকাল । পিতামহ মোহাম্মদ মকবুল হোসেন শৈশবের মেন্টর ছিলেন । মকবুল হোসেন কুষ্টিয়া সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের একজন খ্যাতনামা প্রিন্সিপাল, লেখক ও কুষ্টিয়া বাহাদুরপুর ইউনিয়নের একজন কর্মদক্ষ চেয়ারম্যান ছিলেন । রওশন হাসান মাইগ্রেশন, ব্যক্তিগত কর্মব্যস্ততা ও উচ্চশিক্ষার প্রাক্কালে কিছুসময় লেখালেখি থেকে বিরত ছিলেন । পরবর্তীতে ২০১৪ সালে তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয় ।
রওশন হাসানের লেখনীর বিষয়বস্তু বহুমুখী । মানুষ, সমাজ, প্রেম, দেশপ্রেম জীবন ও প্রকৃতির নানা বিষয়ে তাঁর স্বতস্ফুর্ততা বজায় রেখে রচনা করে চলেছেন । উপমা, ইমেজারি, দৃশ্যকল্প নির্মাণ, অন্তমিলে ও গদ্য কবিতায় নিজস্বতায় কবিতার জগতে বিচরণ করছেন । বাংলা ও ইংরেজি দুই ভাষাতেই রওশন হাসান নিয়মিতভাবে লিখছেন । রওশন হাসান একজন সফল অনুবাদক । বহু বিখ্যাত ইংরেজী কবিতার অনুবাদে তাঁর পারদর্শীতা দেখিয়েছেন । তিনি বেশ কিছু গানের লিরিক্স লিখেও সমাদৃত হয়েছেন । নিজের লেখা লিরিক্সে নিজে ও সহশিল্পীরা কন্ঠ দিয়েছেন । নিয়মিত প্রবাসের বিভিন্ন সংবাদপত্রে কলাম লিখছেন ।
মন, মনন, সময় ও ভাবনার স্রোতে ভেসে কবি তাঁর সৃষ্টি তৈরী করেন । নিসর্গ,পথ, সমুদ্র সর্বোপরি মানুষকে ভালবেসেই তার কাব্য-শক্তি বিস্তৃতি লাভ করেছে । তাঁর কবিতার প্রসঙ্গ হচ্ছে প্রেম, দেশপ্রেম, বিচ্ছেদ, গৃহকাতরতা,উদাসীনতা,অকারণ উচ্ছ্বাস, একাকীত্ব বোধ, মনস্তাত্ত্বিক সংকট, সূক্ষ্ম জীবনীশক্তি প্রভৃতি । তাঁর গদ্য ভঙ্গির কবিতায় রয়েছে নিষ্কন্টক মসৃণতা, কবিতার নির্মাণ ও বৈচিত্রতা, যা তাঁর কবিতাকে দিয়েছে বিশিষ্টতার যোগান । ভাবনা ও মননের রূপান্তরই কবিতা৷ সৃষ্টির ভাষা, সংস্কৃতি রক্ষার তাগিদ, প্রকৃতির প্রতি অসীম টান, সামাজিক চিত্রণের প্রতি র্দুনিবার আর্কষণ, সৃষ্টির প্রতি সজাগ দৃষ্টি ও পাঠকের প্রতি সজাগ দৃষ্টি নিবেশ বরাবরই। প্রাত্যহিক জীবনের উত্থান-পতন, বেঁচে থাকার আশ্বাস, ভালোবাসা, প্রেমপ্রীতির দৃপ্ত প্রত্যয়, সৌন্দর্যের সোপান বেয়ে কবি চলমান।
বর্তমানে তিনি নিউইয়র্কে সপরিবারে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। তিনি দুই পুত্র সন্তানের জননী । লেখালেখির পাশাপাশি গানেরও চর্চা করছেন । নিউইয়র্কের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ও সামাজিক কর্মকাণ্ড ও প্রকাশনা সম্পাদনার কাজের সঙ্গে সংপৃক্ত রয়েছেন ।
রওশন হাসানের সাহিত্যে বিচরণ ভঙ্গিতে তাঁর কোন বাঁধা নেই, তিনি তাঁর স্বাধীন সত্ত্বা নিয়ে এগিয়ে চলেছেন নিজস্ব ভিত মজবুত রেখে ।
সংবেদনশীল এই কবি ভাষা ও অন্তর্মুখি ভাব বিন্যাসে তাঁর দক্ষতা ও অনুভূতি প্রকাশ করে অগণিত পাঠকের হৃদয় জয় করছেন । বাংলা সাহিত্যে তাঁর আসন সুপ্রতিষ্ঠিত হোক এবং তাঁর সাহিত্যকর্মের অকৃত্রিম ধারাবাহিকতা বজায় থাকুক । তাঁর সৃষ্টিশীলতা সুদূরপ্রসারী ও সর্বজনবিদিত হোক ।
বাসাপ বর্ণবিন্যাস সাহিত্য সম্মাননা(২০১৭)
বেগম লুৎফুন্নেসা আব্বাস ভাষা ও সাহিত্য সম্মাননা (২০১৯)

লেখকের গ্রন্থসমূহ :
স্বপ্নের অভিলাষে
নন্দিত সায়রে
মেঘ তুমি কতদূরে
অনুভবে অনুক্ষণ
সবুজ ঘাসের পৃথিবী
জলের রঙ বদলে যায়
বাতাসে দোঁহের সংকেত ভেসে আসে
অণূদিত বর্ণমালা
Over The Horizon
গন্তব্যপথ ও কিছু সঙ্গী
হৃদয় জমিনে বৈরী বসন্ত
তোমাকে প্রদক্ষিণ করি
Midnight's mono। ogue
অরণ্য অপরাহ্ন (উপন্যাস)
নয়ন সমুখে তুমি নাই ( স্মৃতিকথা )
Wednesday mourning.


এ কে এম সাইদুজ্জামান


জন্ম ১২ই আগস্ট বাংলাদেশে। শিক্ষা সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং কানাডায়। সোভিয়েত ইউনিয়নের আজেরবাইজান সিভিল এঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট থেকে প্রথম সিভিল এঞ্জিনিয়ারিং এ ডিগ্রি, আজেরবাইজান তৈল ও রসায়ন ইনস্টিটিউট থেকে তাপ এবং পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে জল শোধনের উপর গবেষণার জন্য রুশ ফেডারেশন প্রদত্ত পি এইচ ডি ডিগ্রি,কানাডার কনকোর্ডিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রথমে এনভায়রনমেন্টাল এঞ্জিনিয়ারিংএ গ্রাজুয়েট সার্টিফিকেট এবং সব শেষে সিভিল এঞ্জিনিয়ারিংএ পি এইচ ডি। বিদ্যালয়ে বিচরণ ঢের হয়েছে বিধায় এরপর থেকে বিদ্যালয় থেকে দূরে থেকেছি। বর্তমানে কানাডার অন্টারিও প্রভিন্সে অনুমতিপ্রাপ্ত লাইসেন্সধারী প্রকৌশলী। 

Diogenes the Cynic এর মতো ভাবতে ভালবাসি, "আমি এই পৃথিবীর নাগরিক ।" অবাস্তব ভাবনা বৈকি! যুক্তরাষ্ট্র এবং ক্যানাডার বিভিন্ন শহরে, এক বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছুদিন শিক্ষকতা এবং সিভল এঞ্জিনিয়ারিং পেশায় আমি সর্বদাই সাময়িক এক কর্মজীবী। সর্বদা সাময়িক আর চিরস্থায়ী বস্তুত একই বস্তু বলে বোধ করি । জীবিকা অর্জনের তাগিদে সিভল এঞ্জিনিয়ারিংয়ের নিরস কর্মকান্ড আমার জীবনে এক স্থায়িত্ব দখল করে ফেলেছে। সেই যৌবন থেকে ভেবেছি মিস্তিরিগিরি সাময়িক দুএকটি বছর করে পাকাপোক্ত ভাবে সাহিত্য জগতে ঢুকে পড়ব - বাস্তব তা হতে দেয়নি । আর সামান্য একটু বেশি সাহস থাকলে ভদ্র গোছের একজন লেখক হতে পারতাম হয়তো । ১৯৭৯ সালে প্রথম লিখেছি, ১৯৮০-১৯৮১ তে একালের নামকরা লেখকদের সাথে সেকালে সাহিত্যের দারুন আড্ডা দিয়েছি - এই স্মৃতিটুকু সম্বল করেই এই বুড়ো বয়সে সাহিত্যের পথে আমার এই বিলম্বিত যাত্রার শুরু । আমার সাহিত্য রচনা যাঁরা পছন্দ করেছেন, কাকতালীয়ভাবেই তাঁদের অনেকেই জীবনের কোনো এক সময় নিদারুন মস্তিস্ক বিকৃতির প্রমান রেখেছেন, আর এ ব্যাপারটাও ফলত আমাকে বেশ নিরুত্সাহিত করেছে । গোটা দুয়েক বই, ডজন খানেক রচনা আমার ছাপা হয়েছে - তবে তা সাহিত্যের নয়, বাংলা ভাষায়ও নয় । ইংরেজি এবং রুশ ভাষায় লেখা ওই রচনাগুলো । গোটা চারেক ছোট গল্প বাংলায় লিখিয়ে নিয়েছে আমার বন্ধুরা, তা ছাপানোর ব্যবস্থাও তাঁরাই করেছেন । পাঠকদের কেউ কেউ আবেগে মন্তব্য করেছেন সব কটি লেখাই নাকি শ্রেষ্ঠ । এরকম মন্তব্য আমাকে নিরুত্সাহিতই করেছে এতকাল । যদি সত্যিই আমার লেখাগুলো ভালো হয়ে থাকে তবে হয়তো পঞ্চম লেখাটি আর সেরকম ভালো হবে না ।

১ । কেন লিখি? পাঠকের অনুরোধের ঢেকি গিলি।

২ । আমার প্রিয় লেখক - বাংলা সাহিত্যে শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়, রচনা "কাগজের বউ"; ইংরেজি সাহিত্যে ফিলিপ রথ, রচনা "দ্য ডায়িং এনিম্যাল"; রুশ সাহিত্যে ইভান বুনিন, রচনা "ভালোবাসার ব্যাকরণ (грамматика любви)" । আমি নিজে খুবই খারাপ ধরনের পাঠক - কোনো রচনার বিষয়, কাঠামো, কৌশল, শব্দ নির্বাচন আমার মনে না ধরলে পড়তে ইচ্ছে করে না তা সে যত বড় লেখকের রচনাই হোক না কেন।

৩ । ইন্টারনেট বাংলা সাহিত্যকে অবশ্যই উন্নতির শিখরে পৌঁছে দেবে বলেই আমি বিশ্বাস করি । পাঠকের বিবেচনা শক্তি বাড়বে, ভালো লেখার ক্ষুধা-তেষ্টা বাড়বে - সৃষ্টি বাড়তে বাধ্য যখন তার প্রয়োজন তীব্র হতে থাকে ।

8 । বাংলা সাহিত্যের অতীত এবং ভবিষ্যত দু'কালই মারাত্মক উজ্জ্বল। বর্তমান কালটাই শুধু একটু বেশি সময় নিচ্ছে ভবিষ্যতের প্রস্তুতি নিতে।

৫। যে লেখক ভালো লিখতে পারেন তিনি বাধ্য লিখতে। না লিখলে তার শাস্তি হওয়া উচিত, হয়ও বটে। যে লেখক ভালো লিখতে পারেন না, তার উচিত লেখার লোভ সামলানো । বাংলা সাহিত্যে অধুনা নামকরা অনেক লেখকের স্থানে আমি থাকলে লেখালেখি স্থায়ী ভাবে বাদ দিয়ে দিতাম । বড় পাপ হয় যা তা লিখে পাঠকের হাতে দিলে, বড় পাপ হয় সাহিত্য, বিজ্ঞান বা প্রকৌশলকে শুধুই ব্যবসায় পরিণত করলে ।

৬ । বর্তমান প্রজন্মের কাছে আমার প্রত্যাশা? বর্তমান প্রজন্মকে আরও একটু স্থির, আরো একটু বিবেচক, আরো একটু প্রশিক্ষিত দেখতে পেলে ভালো লাগতো ।

৭ । একদিন লেখক হবার স্বপ্ন দেখেছিলাম - হতে পারিনি । অন্য অনেক কিছু লিখে লিখে জীবন কেটে গেলো, সাহিত্যের লেখা হলো না - হবে না - হয়তো যোগ্য নই ।