শিউলী জাহান

জন্ম: ১০আগস্ট। পৈতৃকসূত্র: মানিকগঞ্জ জেলা, সিঙ্গাইর থানা,
পারিল গ্রাম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতক ও
স্নাতকোত্তর।
সাংবাদিকতা দিয়ে পেশাজীবন এবং লেখালেখির জগতে প্রবেশ। জড়িত ছিলেন বেশ
কিছু সাপ্তাহিক ও পাক্ষিক পত্রিকায়। প্রকাশিত হয়েছে দু’টি কাব্যগ্রন্থ
–
আশার বাগানে নীল প্রজাপতি; দ্রোহের সাত রঙ। কবিতাই তার আরাধনা। কবিতার
নিগড়ে বেঁধে থাকতেই পছন্দ করেন। তবে সব ধরণের লেখা ও পড়ার প্রতি আগ্রহী
যাকিছু মন ও হৃদয়কে আন্দোলিত করে, ভাবনার সাগরে ঢেউ তোলে। প্রকৃতি ও
মানুষ তার লেখার মূল বিষয়। বর্তমান নিবাস কানাডার টরন্টো শহরে। বর্তমানে
কানাডার
একটি প্রতিষ্ঠানে বিশ্লেষক (Analyst) হিসেবে কর্মরত আছেন।
***
ফিরোজা হারুন
জন্মঃ জানুয়ারি ১, ১৯৪৪, ময়মনসিংহ জেলার ত্রিশাল থানার হরিরামপুর
গ্রামে। স্নেহময় পিতা জনাব আব্দুস সোবহান বিশ্বাস ও মাতা জুবাইদা
খাতুনের ছায়ায় বেড়ে ওঠা।শিক্ষাঃ ময়মনসিংহ বিদ্যাময়ী বালিকা উচ্চ
বিদ্যালয়। তারপর টাঙ্গাইলের কুমুদিনী কলেজ হতে বি.এ. পাশ করে ঢাকা
বিশ্ববিদ্যালয় হতে ইতিহাসে এম. এ. সমাপ্ত করে ময়মনসিংহ টিচার্স
ট্রেনিং কলেজ ফর উইমেন থেকে বি. এড. ডিগ্রী অর্জন এবং ঢাকায় আদমজী
ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুলে যোগদান। এক কন্যা ও এক পুত্র সন্তানের
জননী ফিরোজা হারুনের সাহিত্য অঙ্গনের অগ্রযাত্রার মূলে প্রেরণা
যুগিয়েছে তাঁর স্বামী ডাঃ মোহাম্মদ হারুন। তাঁর প্রথম উপন্যাস
'জীবনেরে কে রাখিতে পারে' সাপ্তাহিক রোববারে ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশের
পর ১৯৯৭ সালে গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়েছে। আর আন্তর্জালে প্রকাশ
পেয়েছে ২০০৮ সালে। দ্বিতীয় প্রকাশিত উপন্যাস ২০০০ সালে 'সুখের
লাগিয়া'। ২০০৮ এ প্রকাশিত হয়েছে আরো ছয়টি গ্রন্থ। কিশোর সংকলন
-মেঘরাজা রোদরাজা, কাব্য সংকলন-নিশি লোর, উপন্যাস-প্রতীক্ষা, তিন
পুরুষের গল্প, স্মৃতির দুয়ারে এবং গল্প ও প্রবন্ধ সংকলন-ছিন্ন বীণার
তার। লেখালেখির পাশাপাশি তিনি সমাজকল্যাণ মূলক কাজে নিয়োজিত রয়েছেন।
প্রতিষ্ঠা করেছেন তাঁর মায়ের স্মৃতিস্মরণে একটি প্রাইমারি স্কুল তাঁরই
নিজ গ্রামে।
***
আলীম আল রাজী - আজাদ

জন্মঃ ২২ জানুয়ারি । পিতাঃ মোঃ ইউনুস মিয়া। মাতাঃ মৃত সাজদা বানো। দুই ভাই - বোন।
পিতা - সরকারি রাজেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ , ফরিদপুর এর পদার্থ বিদ্যা বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক। শিক্ষা জীবন শুরু ব্যাপ্টিস্ট চার্চ মিশন স্কুল , ফরিদপুর থেকে। তারপর ফরিদপুর জিলা স্কুল এবং সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ এম,এস,এস, (সোসিওলজি) তে উচ্চতর ডিগ্রি লাভ করি। শিক্ষা জীবন শেষ করেই স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরে "সোসিওইকোনোমিস্ট" পদে চাকুরীতে যোগদান করি।অত্যন্ত স্বাধীনচেতা মনোভাব এর কারনে সাত বছর চাকরি করে স্বেচ্ছায় চাকরি ছেড়ে দেই।
স্কুল জীবন থেকেই লেখালেখির অভ্যাস ছিল। স্কুল এবং কলেজ ম্যাগাজিন থেকেই লেখা প্রকাশের সূত্রপাত। এছাড়াও বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকা, সাহিত্য সাময়িকীতে লেখা ছাপা হয়ে আসছে।
লেখালেখির পাশাপাশি সমাজের সুবিধাবঞ্চিত অবহেলিত মানুষের জন্য নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছি। বহুসংখ্যক সাহিত্য পরিষদ এবং বিভিন্ন প্রকার সামাজিক কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত আছি।
পিতা - মাতা আমার আদর্শ।
***
শেলীনা জামান

জন্ম ২১শে ডিসেম্বর, মাগুরা, বাংলাদেশে। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
থেকে ১৯৮১ সালে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করেন। সুইডেনের
উপসালা মিউনিসিপ্যালিটিতে শিক্ষক হিসেবে কাজ করছেন।
***
হোসনে আরা জেমী

আমি হোসনে আরা জেমী। তবে সবাই ডাকে জেমী।
বগুড়ার কাঁদা জল মেখে বড় হওয়া। বেড়ে ওঠার দিনগুলোতে বগুড়ার সাংস্কৃতিক
অঙ্গন থিয়েটার, বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের বইপড়া প্রোগ্রাম,
রবীন্দ্রসংগীত সম্মেলন পরিষদের সাথে থেকে বাংলা সংস্কৃতিকে এগিয়ে নেয়ার
প্রয়াস খোঁজা।
ডিপ্লোমা সিভিল ইঞ্জিনিয়ার পরে মাস্টার্স পলিটিক্যাল সাইন্স।
চাকুরীজীবন কেয়ার ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশে ট্রেনিং অফিসার। বর্তমানে
কানাডা প্রবাসী ।
বুদ্ধি ও শারীরিক প্রতিবন্ধীদের সেবা দেওয়াটাকে এখন পেশা হিসাবে
নিয়েছি।
আশির দশক থেকে আবৃত্তি এর সাথে সংযুক্ত ছোট বেলায় লেখালেখি দেওয়াল
প্রত্রিকায় ও ম্যাগাজিনে।
প্রথম কাব্যগ্রন্থ " বৃষ্টি করে নেবে" প্রকাশিত হয় জার্নিম্যান
পাবলিকেশন থেকে ২০১৯
দ্বীতিয় কাব্যগ্রন্থ "চিত্রপট" পেন্সিল পাবলিকেশান ২০২০
শফিক করিমের সাথে যুগলবন্দী করে কবিতা সংকলন প্রকাশিত হয় তিনটি।
*বিশ্বাসী করতল
*কথোপকথন - ৪
* ভালোবাসার মিথোলজি
***
প্রতিমা সরকার

আদি নিবাস সিলেট হলেও বাবার কর্মসূত্রে কুমিল্লায় বসতি স্থাপন আর সেখানেই আমার জন্ম,বেড়ে উঠা।রাজনীতি বিজ্ঞান বিষয়ে কুমিল্লা থেকে অনার্স আর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স করে লেখাপড়ায় ইতি টানি।এরপর কিছুদিন টুকটাক কাজ করে সংসার জীবনে জড়িয়ে যাই।ছোটবেলা থেকেই পড়ার প্রতি আলাদা এক নেশা থেকে জীবনের এই মধ্য বেলায় এসে নিজেও টুকটাক লেখা শুরু করেছি।আসলে চারপাশের দেখা,শোনা ঘটনাগুলোকেই মনের মাধুরী মিশিয়ে লেখার মধ্য দিয়ে তুলে ধরার চেস্টা করি।
বর্তমানে কানাডার টরন্টো শহরে বসবাস ও একটা ডেকেয়ারে বাচ্চাদের সাথে কাজ করে জীবিকার্জনে ব্যস্ত আছি।
***
ফারজানা করিম অর্পিতা
"অপরাজিতা অর্পিতা" নামে লেখালেখি করেন। কোন একদিন জীবনের কোন একটি
দিকে অপরাজিত হবেন, এই স্বপ্ন তাকে বেঁচে থাকার প্রেরণা যোগায়।
একাডেমিক পড়াশোনায় কখনো দ্বিতীয় হননি। পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেনীতে
ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি, এসএসসি ও এইচএসসি তে জিপিএ ৫ রয়েছে তার ঝুলিতে।
পেশায় একজন "ফার্মাসিস্ট"। নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফার্মেসীতে
অনার্স ও মাস্টার্স শেষ করেছেন। মাস্টার্স প্রোগ্রামে সিজিপিএ-৪ পেয়ে
রাষ্ট্রপতি গোল্ড মেডেল পান তিনি।
জন্মতারিখ ১৯ শে এপ্রিল। লেখালেখি, আবৃত্তি, বই পড়া, ভ্রমন তার প্রিয়
কাজ। অর্পিতার কাছে ভালোলাগা, ভালবাসা ও মুক্তির অন্য নাম লেখালেখি। এ
পর্যন্ত তার দুটি কাব্যগ্রন্থ "শব্দের বেখেয়ালি আঁচড়" ও " অপ্রেমের
অদ্ভুত আলাপ", একটি অনুগল্প সংকলন 'অব্যক্ত হৃৎকথণ" এবং অনেক সংকলন
রয়েছে।
***
সাগর জামান

কবি,প্রাবন্ধিক,সাংবাদিক,শিল্প সমালোচক। জন্ম২৯ এপ্রিল১৯৭৪ মাগুরা ।
তার পিতার নাম এ কে এম হামিদুজ্জামান। মাতার নাম বেগম মাহমুদা মির্জা।
সাগর জামান শৈশব থেকে লেখালেখি করছেন।
পারিবারিক পরিমণ্ডল থেকে তিনি পেয়েছেন সাহিত্যের খোঁজখবর নেয়ার পরিবেশ
। বড় ভাইদের লেখালেখি দেখে তার এই আগুনে হাত পোড়ানোর সুত্রপাত।
ছেলেবেলা থেকেই লেখালেখি শুরু করেন তিনি। তবে নব্বই দশকের শুরু থেকে
সাগর জামানের নিবিড় সাংবাদিকতার সুচনা । সমকালের সমাজ বাস্তবতার নিরিখে
নান্দনিক সমালোচনা স্পষ্ট কথন বিশ্লেষণধর্মী লেখালেখির মাধ্যমেই তিনি
এই বুদ্ধিবৃত্তিক জ্ঞানভিত্তিক পেশাকে চলমান রেখেছেন।তিনি বিভিন্ন
জাতীয় দৈনিকে লেখালেখি করেন। দৈনিক আজকের কাগজ,দৈনিক বাংলাবাজার
পত্রিকা,দৈনিক যায়যায়দিন,দৈনিক ভোরের কাগজ,দৈনিক জনকণ্ঠ,প্রভৃতি
পত্রিকায় বিস্তর লিখেছেন। সম্পাদনা করেছেন আলোকের এই ঝর্ণাতলে,অমল ধবল
দিন,ফিরে আসি মাটির টানে,নীল আকাশ সোনালি রৌদ্র প্রভৃতি সাহিত্য কাগজ।
মফস্বলে থেকে লিটল ম্যাগাজিন প্রকাশনার মাধ্যমে তিনি অনেক নামী কবি,
লেখক,সাহিত্য সমালোচকদের বাহবা কুড়াতে সক্ষম হয়েছেন । সৃজনশীল প্রঞ্জার
প্রতিফলন ঘটেছে তার লেখায়। তার সম্পাদনায়। মফস্বল থেকে প্রকাশিত সাহত্য
কাগজে তিনি দেশের খ্যাতিমান কবি সাহিত্যিকদের যুক্ত করেছেন সাফল্যের
সাথে। মফস্বলের প্রতিকূল পরিবেশে লিটল ম্যাগাজিন চর্চায় তিনি ছিলেন
অগ্রগণ্য। সৃজনশীল রচনার পাপাশাশি সমালোচনামূলক লেখালেখিতেও তিনি
স্বচ্ছন্দ বোধ করেন। স্বকীয় ভাষা বিন্যাস,প্রেমময় আবেগ, শিল্প
সৌন্দর্যবোধ, প্রকৃতি, বাস্তবতা, মানবিক সামাজিক সব সংকট জীবনবোধ,
দেশপ্রেম, স্বাধীনতার চেতনা, তার লেখালেখিতে পরিলক্ষিত হয় নানাভাবে।
সাহিত্যের সব ক্ষেত্রে তার বিচরণ তার লেখক সত্তাকে মহিমান্বিত করেছে।
তিনি যেমন গদ্য রচনার ক্ষেত্রে প্রশংসিত হয়েছেন তেমনি কবিতা রচনায়
দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। তার বেশির ভাগ কবিতা নারী প্রেমের আবেগ অনুভূতি
সংলগ্ন।
বৈপ্লবিক সময়কে যারা সাহিত্যে ধারণ করেছেন তাদের ঐশর্যমণ্ডিত জগৎ,
সৃষ্টিশীলতা নানাভাবে সুবিন্যাস্ত করেছেন সাগর জামান তার বিভিন্ন
প্রবন্ধে। সমষ্টির সংকট সংগ্রামী চেতনা, প্রেম প্রবণায় তার লেখালেখির
অনাবিল ভুবন হয়ে উঠেছে বৈচিত্র্যময় । সাগর জামানের প্রবন্ধ গ্রন্থ
'আলোর অনাবিল ভুবন 'পাঠক মহলে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে।
বাংলা সাহিত্যকে উর্বর করেছেন খ্যাতিমান কবি সাহিত্যিক। তাদের জীবন
দর্শন, দিক নির্দেশনা ও ভাবনা সাগর জামান তার প্রবন্ধ গ্রন্থ "আলোর
অনাবিল ভুবন" এ গভীর অনুসন্ধানে বিশ্লেষণ করেছেন। তার রচনা যুক্তি
নির্ভর ও তথ্য সমৃদ্ধ। বলা যায় কাল পরিক্রমায় এ সব কবি সাহিত্যিকদের
জীবনবোধ তরুণ প্রজন্মকে নতুনভাবে উদ্দীপ্ত করবে। সাগর জামান সহজ সরল
ভাষায় তার রচনায় স্বদেশকে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে যুক্ত করেছেন।
***
মধুবন্তী আইচ

জন্ম ২৯ মে, কোলকাতায়। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তুলনামূলক
সাহিত্যে ডিগ্রি অর্জন করেন। বর্তমান নিবাস গুজরাটের ভাদোদরা শহরে।
***
ড. নার্গীস আক্তার
আমি নদী রহমান নামে লিখি। আমি ড. নার্গীস আক্তার মূখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, প্রজনন বিভাগ,
বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইন্সটিটিউট।আমি মূলত কৃষিবিদ অনার্স করেছি
বাংলাদেশ কৃষিবিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ থেকে।এম এস করেছি বঙ্গবন্ধু শেখ
মুজিবুর রহমান কৃষিবিশ্ববিদ্যালয়, সালনা গাজীপুর থেকে এবং পিএইচডি
করেছি জেনেটিক্স এন্ড প্লান্ট ব্রিডিংএ বাকৃবি, ময়মনসিংহ থেকে। আমার
দেশের বাড়ি ফরিদপুর। বাবা ফরিদপুর রাজেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের
বাংলার প্রফেসর ছিলেন। সেই সুবাদে সাহিত্য অনুরাগী ছিলাম। বিজ্ঞান নিয়ে
পড়তে গিয়ে সাহিত্যাঙ্গনে হাঁটা হয়নি। তিন বছর যাবৎ কবিতা লিখছি। বিগত
দুটি বইমেলায় আমার দুটো কবিতার বই বের হয়েছে। ২০২০ সালের বইমেলায়
"অসমাপ্ত পঙক্তিমালা" নামে বইটি বের হয়েছে পেন্সিল প্রকাশনী থেকে যা
এখন রকমারিতে পাওয়া যাচ্ছে।
***
অরুণোদয় কুণ্ডু

– নাম অরুণোদয়। ধাম হাওড়া , পশ্চিমবঙ্গ , ভারতবর্ষ আর কাম
প্রযুক্তিবিদ্যার শিক্ষকতা । এখন প্রশ্ন আসে সাহিত্যে আমার কাম কি? কাম
নেই আছে ভালবাসা , ছোটবেলা থেকে। জীবনটা নদীর মত বয়ে যায়, তার
কর্মমুখর পথের দুধারে অববাহিকার শস্য শ্যামল সাহিত্য তার সবুজ রঙ্গিন
হাত দিয়ে জড়িয়ে রয়েছে আমার হৃদয়। সেই সবুজের পূজা ই আমার সাহিত্য
। কখনো তা ভোরের গৈরিক রঙে ত্যাগ মন্ত্রে দীক্ষা ; কখনো বিকেলের কনে
দেখা রোদে ঘরে ফেরার গান । কখনো প্রতিজ্ঞা ,কখনো হাসি কখনোবা অভিমান
।কখনোবা তা বীরমন্ত্রে দীক্ষিত হয়ে মানবাত্মার কল্যানের খোঁজে ফেরার ।
এসব নিয়েই আমার সাথে সাহিত্যের জমজমাট প্রেম । তার সাক্ষাতকারের
সাক্ষী হতে বারন নেই কারোর। তাইতো সে আজ “কার্তিকের কুয়াশা” এর দরবারে
, একমুঠো দমকা হাওয়ার ভালবাসা নিয়ে।
***
এ কে এম সাইদুজ্জামান

জন্ম ১২ই আগস্ট বাংলাদেশে। শিক্ষা সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং কানাডায়। সোভিয়েত
ইউনিয়নের আজেরবাইজান সিভিল এঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট থেকে প্রথম সিভিল
এঞ্জিনিয়ারিং এ ডিগ্রি, আজেরবাইজান তৈল ও রসায়ন ইনস্টিটিউট থেকে তাপ
এবং পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে জল শোধনের উপর গবেষণার জন্য রুশ
ফেডারেশন প্রদত্ত পি এইচ ডি ডিগ্রি,কানাডার কনকোর্ডিয়া বিশ্ববিদ্যালয়
থেকে প্রথমে এনভায়রনমেন্টাল এঞ্জিনিয়ারিংএ গ্রাজুয়েট সার্টিফিকেট এবং
সব শেষে সিভিল এঞ্জিনিয়ারিংএ পি এইচ ডি। বিদ্যালয়ে বিচরণ ঢের হয়েছে
বিধায় এরপর থেকে বিদ্যালয় থেকে দূরে থেকেছি। বর্তমানে কানাডার অন্টারিও
প্রভিন্সে অনুমতিপ্রাপ্ত লাইসেন্সধারী প্রকৌশলী।
Diogenes the Cynic এর মতো ভাবতে ভালবাসি, "আমি এই পৃথিবীর নাগরিক ।"
অবাস্তব ভাবনা বৈকি! যুক্তরাষ্ট্র এবং ক্যানাডার বিভিন্ন শহরে, এক
বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছুদিন শিক্ষকতা এবং সিভল এঞ্জিনিয়ারিং পেশায় আমি
সর্বদাই সাময়িক এক কর্মজীবী। সর্বদা সাময়িক আর চিরস্থায়ী বস্তুত একই
বস্তু বলে বোধ করি । জীবিকা অর্জনের তাগিদে সিভল এঞ্জিনিয়ারিংয়ের
নিরস কর্মকান্ড আমার জীবনে এক স্থায়িত্ব দখল করে ফেলেছে। সেই যৌবন
থেকে ভেবেছি মিস্তিরিগিরি সাময়িক দুএকটি বছর করে পাকাপোক্ত ভাবে
সাহিত্য জগতে ঢুকে পড়ব - বাস্তব তা হতে দেয়নি । আর সামান্য একটু বেশি
সাহস থাকলে ভদ্র গোছের একজন লেখক হতে পারতাম হয়তো । ১৯৭৯ সালে প্রথম
লিখেছি, ১৯৮০-১৯৮১ তে একালের নামকরা লেখকদের সাথে সেকালে সাহিত্যের
দারুন আড্ডা দিয়েছি - এই স্মৃতিটুকু সম্বল করেই এই বুড়ো বয়সে
সাহিত্যের পথে আমার এই বিলম্বিত যাত্রার শুরু । আমার সাহিত্য রচনা
যাঁরা পছন্দ করেছেন, কাকতালীয়ভাবেই তাঁদের অনেকেই জীবনের কোনো এক সময়
নিদারুন মস্তিস্ক বিকৃতির প্রমান রেখেছেন, আর এ ব্যাপারটাও ফলত আমাকে
বেশ নিরুত্সাহিত করেছে । গোটা দুয়েক বই, ডজন খানেক রচনা আমার ছাপা
হয়েছে - তবে তা সাহিত্যের নয়, বাংলা ভাষায়ও নয় । ইংরেজি এবং রুশ
ভাষায় লেখা ওই রচনাগুলো । গোটা চারেক ছোট গল্প বাংলায় লিখিয়ে
নিয়েছে আমার বন্ধুরা, তা ছাপানোর ব্যবস্থাও তাঁরাই করেছেন । পাঠকদের
কেউ কেউ আবেগে মন্তব্য করেছেন সব কটি লেখাই নাকি শ্রেষ্ঠ । এরকম
মন্তব্য আমাকে নিরুত্সাহিতই করেছে এতকাল । যদি সত্যিই আমার লেখাগুলো
ভালো হয়ে থাকে তবে হয়তো পঞ্চম লেখাটি আর সেরকম ভালো হবে না ।
১ । কেন লিখি? পাঠকের অনুরোধের ঢেকি গিলি।
২ । আমার প্রিয় লেখক - বাংলা সাহিত্যে শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়, রচনা
"কাগজের বউ"; ইংরেজি সাহিত্যে ফিলিপ রথ, রচনা "দ্য ডায়িং এনিম্যাল";
রুশ সাহিত্যে ইভান বুনিন, রচনা "ভালোবাসার ব্যাকরণ (грамматика любви)"
। আমি নিজে খুবই খারাপ ধরনের পাঠক - কোনো রচনার বিষয়, কাঠামো, কৌশল,
শব্দ নির্বাচন আমার মনে না ধরলে পড়তে ইচ্ছে করে না তা সে যত বড়
লেখকের রচনাই হোক না কেন।
৩ । ইন্টারনেট বাংলা সাহিত্যকে অবশ্যই উন্নতির শিখরে পৌঁছে দেবে বলেই
আমি বিশ্বাস করি । পাঠকের বিবেচনা শক্তি বাড়বে, ভালো লেখার
ক্ষুধা-তেষ্টা বাড়বে - সৃষ্টি বাড়তে বাধ্য যখন তার প্রয়োজন তীব্র
হতে থাকে ।
8 । বাংলা সাহিত্যের অতীত এবং ভবিষ্যত দু'কালই মারাত্মক উজ্জ্বল।
বর্তমান কালটাই শুধু একটু বেশি সময় নিচ্ছে ভবিষ্যতের প্রস্তুতি নিতে।
৫। যে লেখক ভালো লিখতে পারেন তিনি বাধ্য লিখতে। না লিখলে তার শাস্তি
হওয়া উচিত, হয়ও বটে। যে লেখক ভালো লিখতে পারেন না, তার উচিত লেখার
লোভ সামলানো । বাংলা সাহিত্যে অধুনা নামকরা অনেক লেখকের স্থানে আমি
থাকলে লেখালেখি স্থায়ী ভাবে বাদ দিয়ে দিতাম । বড় পাপ হয় যা তা লিখে
পাঠকের হাতে দিলে, বড় পাপ হয় সাহিত্য, বিজ্ঞান বা প্রকৌশলকে শুধুই
ব্যবসায় পরিণত করলে ।
৬ । বর্তমান প্রজন্মের কাছে আমার প্রত্যাশা? বর্তমান প্রজন্মকে আরও
একটু স্থির, আরো একটু বিবেচক, আরো একটু প্রশিক্ষিত দেখতে পেলে ভালো
লাগতো ।
৭ । একদিন লেখক হবার স্বপ্ন দেখেছিলাম - হতে পারিনি । অন্য অনেক কিছু
লিখে লিখে জীবন কেটে গেলো, সাহিত্যের লেখা হলো না - হবে না - হয়তো
যোগ্য নই ।