টরন্টো, ১২ই কার্তিক, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ, নভো সংখ্যা ৩৭   
              
হোমপেজ সম্পাদকীয় পাঠক পরিষদের কথা কবিতা ছোট গল্প ধারাবাহিক সাহিত্য সংবাদ ভ্রমণ কাহিনি নিবন্ধ প্রেমপত্র বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও প্রকৌশল আবৃত্তি / কণ্ঠসঙ্গীত পাঠাগার আর্কাইভ লেখক পরিচিতি যোগাযোগ

কার্তিকের কুয়াশা

 

কবিতার পাতা

 

 

 

 

 

 

তনুশ্রী সামন্তর একজোড়া কবিতা 

 

মধুর মরণ

 

চোখ খুললেই চোখের সামনে একজোড়া চোখ!
চোখ সরতেই চায় না যেন কোনোমতে!
হঠাৎ দেখি হাওয়ায় আঁকা জলছবিরাও
আমায় দেখে মিটিমিটি হাসতে থাকে!
দুপুর গুলোও এখন ভীষণ অবাধ্য খুব
ভাসতে থাকে শ্যাওলা হয়ে দিঘির জলে!
ভুলতে থাকে বইএর পাতা হিসাব খাতা
আচ্ছা বলো এমন করে জীবন চলে!
সূয্যিডোবার আবীরগুলো কি যে পাজি!
জোর করে ঠিক দুই গালেতেই রং মাখাবে!
রঙগুলো যে বুকের ভেতর চুইয়ে ঢোকে
এখন বলো অ্যাত্তোটা রঙ কে সামলাবে?
রাত্রিগুলো নৌকা ভাসায় সমুদ্দুরে
টলোমলো করতে থাকে ঢেউএর চূড়ায়!
মনটাকেও শেষে বোধহয় ভুতেই পেলো
ডুবেই বোধহয় মরবে এবার শাপলা ডোবায়!
মরুক গে যা, একটাই তো জীবন মোটে,
উড়িয়ে দিলাম হিসাব খাতার হাজার পাতা!
এমন করে মরণ যদি নাইবা হবে
বেঁচে থাকায় রইলো কি আর মধুরতা!!

 

তিন্নি

 

তিন্নি...ও তিন্নি!তিন্নি মা আমার...
খাবে এসো সোনা!
তিন্নি তখন ছুট ছুট ছুট...
প্রজাপতি ধরার জন্য ছুটছে
আদাড় বাদাড় ঝোপ ঝাড় পেরিয়ে...
হলদে প্রজাপতিটা উড়ে যায়... সবুজ পাতায় পাতায়...
রঙিন ফুলে ফুলে...
আর টুকটুকে লাল ফ্রকপরা তিন্নির পায়ে
কাঁটা ফুটে রক্ত পড়ে...
টুপ্...টুপ্...টুপ্...!
মা কোলে জড়িয়ে আনে মেয়েকে...
একি পাগলী মেয়ে আমার!
লালফড়িং দেখলে তো আর কথাই নেই!
ঘাসের বনে হামাগুড়ি... মনের ঘরে ইলশেগুঁড়ি...
যেন পৃথিবীর সব সুন্দরকে নিজের করতে চাইতো মেয়েটি!
যেন সব অধরাকে বুকের ভেতর জড়িয়ে ধরে
অনেক অনেক ভালোবাসতে চাইতো সে!
বাগানের রং বেরঙের ফুলগুলোর সাথে গিয়ে
ফিসফিস করে কথা বলতো...
চুমু দিতো আলতো করে...
এমন পাগল মেয়েও কারো হয়!
মা হেসে কুটোপাটি...
সেই তিন্নি বড়ো হয়েছে এখন
চারিদিকে অগনিত মানুষের ভিড়ে মিশে গেছে সবার মতোই...
তবুও সে প্রজাপতি খোঁজে...লালফড়িং খোঁজে,
তার স্বপ্ননীল চোখে লাগানো দুটি আতস কাঁচ দিয়ে... মানুষের বুকের ভেতর!
তীব্র লড়াইয়ের জাগ্রত জীবনে...
ঘুমের স্বপ্নরা উধাও হয়ে যায় ক্রমশ...
দুচোখের আতস কাঁচে জমে ওঠে
অসুন্দর দূষনের ধুলো...
তিন্নি তবুও হলদে প্রজাপতি খোঁজে...লালফড়িং খোঁজে...
মানুষের বুকের ভেতর...
ছুটে চলে অবিরাম নাওয়া খাওয়া ভুলে...
সূদূর নক্ষত্রলোক থেকে মা যেন ডেকে ওঠে
তিন্নি...ও তিন্নি...
খাবে এসো সোনা......

 

 

 

 

 

প্রেম

✍ সাইদুজ্জামান 

তোমাকে বলো, তোমাকে আমি, কোথায় রাখি ?
মিছেই তুমি, পোড়াও কেন, জ্বালাও আঁখি ?
চতুর্দিকে আছি কেবল আমিই নাকি ?
পোড়া মানুষ, পোড়ার আছে, আর কী বাকি ?
গোপন ঘরে, তোমাকে জানি রাখা চলে না,
বেরিয়ে যাবে, লোকের কাছে, সবার জানা।
কেন আমায় জব্দ করো এমন কোরে,
হৃদয় কেন কাতর এতো প্রেমের তোড়ে ?
তোমাকে বলো, তোমাকে আমি, কোথায় রাখি ?
আমিই নাকি খুন করেছি সোনার পাখি।
সিন্দুকেই রাখা যেত কি থাকলে চাবি?
নিন্দুকেরা, জানে খাচ্ছি, কেন এ-খাবি।
টরন্টো, অক্টোবর ২৫, ২০২২

***

সের্গেই ইয়েসেনিনের কবিতা
মূল রুশ থেকে অনুবাদে: সাইদুজ্জামান

 

দেখেছি অনেক পাঁড় মাতালের প্রাজ্ঞ চোখের শিখা,
পতিতার মুখে পবিত্র ছবি দেখেছি বহুত লেখা।
চিনি বলবান, যে কি না কাঁদছে, ফুঁপিয়ে উত্তেজনায়,
দুর্বল যে সে, বইছে দুঃখ, সহনই তার সহায়।
পেয়োনাকো ভয় ভিখারির বেশে চোরের রাজাকে দেখে,
তাড়াহুড়ো করে দিয়োনাকো শাপ তুচ্ছ ব্যাপার থেকে।
ভয় পেতে হলে পাও তাকে যিনি দেখতে সুশীল-ভন্ড ,
সাধুবেশী চোর কেড়ে নিতে পারে আত্মার এক খন্ড।
নিজেই যখন সন্দিহানই, কোরোনাকো তুমি বিচার,
প্রতিশ্রুতিও দিয়োনাকো যদি ইচ্ছে মিথ্যে বলার।
যাচাই কোরোনা যখন করেছো বিশ্বাস নিরবধি,
দিয়োনাকো আর কোনো উপহার কেড়ে নিতে চাও যদি।

 

টরন্টো, অক্টোবর ১৩, ২০২২

 

Я видел пьяниц с мудрыми глазами
И падших женщин с ликом чистоты.
Я знаю сильных, что взахлёб рыдают
И слабых, что несут кресты.
Не бойся вора в нищенском обличьи,
И проклинать за мелочь не спеши –
Ты бойся тех, кто выглядит прилично,
Вор с праведным лицом уносит часть души.
Не осуждай за то, в чём не уверен,
Не обещай, если решил солгать.
Не проверяй, когда уже доверил!
И не дари, планируя отнять.

 

 

 

 

 

ড. ফেরদৌসী বেগমের একগুচ্ছ কবিতা 

 

কে যে আপন মন জানে.......

 

নদীও আপন মাটিও আপন
কাকে ছেড়ে কে যে আপন।
নদী কহিল আমিই তো তোমার সেই-
তোমাকে ভাসাই তোমাকে কাঁদাই
আমার বুকে শত ঢেউ
তারপরও আসে তো কেউ হররোজ।
তুমিও আসো ভালোবাসো
নাউ ভাসাও
কূল নেই কিনারা নেই
কাশের ফাঁকে নীল আকাশ
ডাকে তো কেউ হররোজ।
যেমন করে তুমি আসো সন্ধ্যে রাগের
আবীর মেখে
বসন্ত যেনো শাড়ীর আঁচল।
আমি ভাবি মাটিও তো আমার বড় আপন
তাকে ছেড়ে কেমনে রই।
আমার আছে মাটির টান
বৃক্ষ যেমন পায় গো প্রাণ
শিকড় শুধু আকড়ে থাকে
মাটি যে তার বড় আপন।
সব ঘরেরই জমিন থাকে
জমিন ছাড়া কেমনে বাঁচো
সাদা জমিনের কাপড় খানি
শুধুই আমার নিজের হবে
সেদিন শুধু মাটিই আমার আপন হবে।
মাটি জানে না কেউ জানে না
কার যে কোথায় গোর হবে।
রাজশাহী
১৪.১০.২০২২

 

জলের টানে.....

 

একমুঠো ছুটি দরকার
লম্বা ছুটি-
সমুদ্র দেখা দরকার
কতদিন বালিয়াড়ি ছুঁই নাই!
উপচে পড়া নীল ছুঁতে চাই
আলো খেলা জলে
বেলা যাবে রুপালী মেঘে ভেসে,
দুহাতে জল ঠেলে ঠেলে
ভেসে যাইনি কত দিন!
আমার একটু সমুদ্র দেখা দরকার
যত সব হাবিজাবি কাজ
সেরে ফেলি নিমিষে
শুধু সমুদ্রে যাবো বলে
পায়ে কেটে কেটে ভেজা বালি মাড়িয়ে
যেতে চাই নোনাজলে।
হিল্লোলিত সীগাল
অবারিত নীল
সফেদ ঢেউ
কেউ তো বলো -
এসো সমুদ্রে যাই
আজ আকাশের চোখে জল নেই
সাগরে উত্তালতা নেই
পাড়ে বসে গুন্জন শুনি
মৌনতার আস্বাদনে।
রাজশাহী
০৪. ০২.২০২২

 

আরোধ্য জীবন....৷৷

পথ হেঁটেছি পথের টানে
ঘর ছেড়েছি সেই কবেই
এমনি করেই ধুলোর পথে যাক না দিন
আর কিছুদিন লাগামবিহীন।
পথের ধারের নাম না জানা ফুল ফুটুক তবে
বেখেয়ালী
বেশ তো লাগে সুবাস আসে।
যাওয়া আসায় গাড়ীর চাকায় ধুলো ওড়ে
সবুজ পাতা ছেয়ে ফেলে
ধুলো ওড়ে ধোঁয়া ওড়ে
মোড়ের কোন দোকান হতে
তেলে ভাজার গনধ আসে
চায়ের কাপের ঠুকাঠুকি-
জীবন তো চলে যাচ্ছে বেশ
এমনি করে যাক না চলে আর কিছুদিন।
যাচ্ছে চলে এই তো বেশ
বুঝে গেছি পরিপাট্য
আর আরোপিত এ জীবন থেকে
খোলা হাওয়া ও ফুটপাথ আমায় বেশি টানে।
কোলাহলের নগর থেকে
শপিংমলের ঝারবাতি ছেড়ে
নিত্য সুখের বৈভব থেকে
অরণ্য আমায় বেশি টানে।
চাঁদের ছায়া ভালো লাগে
নির্জনতার এ প্রহর গুনে যাচ্ছে দিন
এই তো বেশ
মানুষ হওয়ার নেশার থেকে
রইলাম না হয় দূরে কিছু
আরোধ্যতার আরাধনায়।
০১.১০.২০২২
রাজশাহী।


 

 

 

 

 

জয়া চক্রবর্তী সোমার একগুচ্ছ কবিতা 

 

ইচ্ছেগুলো

ইচ্ছে ছিল হালকা পালক, ইচ্ছে হলুদ খাম
শীত দুপুরে ইচ্ছে হল প্রবাসী এক নাম
হাত রেখেছে উষ্ণ কপাল নিঃশ্বাসে তার জ্বর
মনকেমনের গল্প লেখা অতৃপ্ত অন্তর
ছুঁয়ে দেবার ইচ্ছে ভীষণ , ইচ্ছে-পূরণ নয়
প্রেমটা নাকি ছোঁয়াচে খুব সংক্রমণের ভয়।
***
গৃহলক্ষ্মী

দুয়ারে তোর সাজিয়েছিলি
লক্ষ্মী পায়ের ছাপ
অপেক্ষাতে দীপ জ্বালিয়ে
থাকলি সারা রাত।
রাত ফুরোলো আসলো না যে
লক্ষ্মীমন্ত মেয়ে
বধূর বেশে বারোমাস্যা,
গৃহলক্ষ্মী সেই।
***
ভাবনা

ভাবনা ছিল মেঘলা আকাশ
জলছবিদের মুখ
বৃষ্টি হয়ে পরল ঝরে
অকারণের সুখ,
সেই বৃষ্টি তোমায় ছুঁলে
ইচ্ছেরা জাল বোনে
মেঘ জমেছে কাজলে আর
মেঘলা ঈশান কোণে৷
***
বিশ্বকর্মা

তোমার শ্রমেই গড়েছ পৃথিবী
আমাদের সুখ যত,
মর্ত্য মাটির বিশ্বকর্মা
করেছি গো মাথা নত।
***
পাখি
গত রাতে ঝড়ে যার ভেঙে গেছে ঘর
স্বপ্ন ভাঙার ব্যথা সে পাখির জানা,
আকাশের ডাক আজ হয়ে গেছে পর
পাখি ভাবে কোনদিনও মেলবে না ডানা।
গান ভুলে পাখি বসে থাকে দিনভর
ভাঙা ডালে খুঁজে ফেরে ভাঙা আশিয়ানা
পাখি ভাবে খড়কুটো যার নির্ভর
তার চোখে স্বপ্নের বাসা বাঁধা মানা।
দিন যায় মাস যায় কবে আনমনে
ছোট্ট সবুজ পাতা ভাঙা ডাল চিরে
পাখিটাও ডাক শোনে আকাশের কোণে
আকাশ ডাকছে তাকে আয় পাখি ফিরে।
কম্পিত ডানা মেলে সম্বল আশা
পাখি তাই আকাশেই খুঁজে নিল বাসা।

 

 

 


 

 

 

 

 

আমাদের বিরহকালের এক বছর  
✍ ম্যাক আজাদ

 

বিরহ কাল নাতিদীর্ঘ
কেনোযে শতাব্দীর মত দীর্ঘ মনে হয়
অপেক্ষার সময় তবু শেষ হয়
আমারা বিরহ কালের এক বছরের শেষ প্রান্তে
প্রায় একটি বছরে আমাদের দেখা হয়নি,
কথা হয়নি,
হয়নি কোন শুভেচ্ছা বিনিময়।

কিছুটা সংশোধনী , হয়েছে দেখা
দুই একবার
চোখে চোখ পড়তেই
দৃস্টি সরিয়েছি ঘনমেঘ-অভিমানে
চোখ সরে গেছে ঘুরে গেছে অন্য কোনো ভুবনে
দুজন দুজনকে দেখেছি
পথে পড়ে থাকা মৃত পাতা দেখার মতন
কোন ছোট গল্পের শুরু হয়েছিল হৃদয় গভীরে? কেউ তা জানিনা
দুজন দুইপথে হারিয়েছি হারাবার প্রয়োজনে
দিয়েছি পাড়ি অজানার পথে
দুজন দুদিকে চলে যেতে যেতে
ফিরেকি দেখেছি একবারও?
বলতে পারিনা
হয়তো বিষন্ন মন ছিল
তাইকি কেউ বলিনি, কেমন আছো তুমি?
না দেখার পড়ে থাকা সময় কেমন ছিলে তুমি!
কেমন ছিলাম আমি!
তা'তে কার কিইবা আসে যায়?
কেউ কিছু বুঝিনি।

আমারা বিরহ কালের এক বছরের শেষ প্রান্তে
থেমে থাকেনি কিছুই
যেমন নদীর ঢেউ,
প্রতিদিনের সূর্য ডোবা সূর্যাস্ত
পাখিদের কিচিরমিচির রব
মাঝ রাতে বুনো শিয়ালের ভয়ার্ত আর্তনাদ
পানকৌড়িদের ডুব সাঁতার
সারিবেঁধে বুনো হাঁসেদের ঘরে ফেরা
কিছুই থামেনি
আমাদের দেখা হয়নি গত এক বছর
আমাদের বিরহ কালের এক বছরের শেষ প্রান্তে
অথচ কেউ জানিনা কেমন বেলা
কেমন কেটেছে রাত্রি।

অবিরাম বৃষ্টি ধারা
সিক্ত হয়েছে শুস্ক মাটি
রোদে পোড়া ঘাস
ধুয়েছে সকল ধুলিকনা।
অথচ না বলা যত অভিমান
পুঞ্জিভূত সময়ের দীর্ঘ জমাখাতায়
এখন রাত্রি বেশ
প্রায় শেষ শেষ
কথা ছিল যত
হয়েছিল অবিরত
ভুলে সব কস্ট জ্বালা
এখন ঘুমানোর পালা
অথচ এই চোখ নিস্পলক তাকিয়ে
তারা ভরা আকাশের দিকে।
গত একটি বছরে কত তারা নিভে গেছে
কত তারা জ্বলে গেছে নিরলস একাকী
চাঁদের বুকে দেখা যায়নি সেই বুড়িটাকেও
একটি বছর হাসেনি রূপালী চাঁদ নদীর জলে।

আমারা বিরহ কালের এক বছরের শেষ প্রান্তে
আমাদের বিরহ কালের এক বছর পূর্তি হতে চলল।

সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২২, টরন্টো
বিশেষ কৃতজ্ঞতাঃ কবি মেহরাব রহমান

 

 

 

 

 

 

 

 

প্রণব ভট্টাচার্যের একজোড়া  কবিতা  

 

-অন্তরমহল-

বাইরে সাদা বকের পালক
ভেতরে ক্ষত টুকটুকে লাল
অন্তর-মহল অন্তরে থাক
অন্তর হায় প্রেমের কাঙাল।
মেঘমুক্ত বাইরে আকাশ
বৃষ্টি ঝরছে অন্তরালে
দিকচক্রবাল মেঘে ঢাকা
সূর্য হাসে চোখের জলে।
মুছতে যে চাই লোহিত বিন্দু
ঝরতে থাকা রক্তধারা
কল্পনা মোর বিষাদসিন্ধু
আলপনা যার বাঁধনহারা।
এই যে মনের সুকল্পনা
রূপটি পাবে তোমার ছোঁয়ায়
আকাশ-প্রতিম অন্তরমহল
তাজমহলও মাথা নোয়ায়।
তোমায় ভেবে নিত্য গড়ি
সাতমহলা স্বপ্নপুরী
ডানা মেলে বলাকা মন
তোমায় ভেবে সুরঞ্জনা
রাগ অভিমান তুচ্ছ,--- ভুলে
আসছো কবে! পুচ্ছ তুলে?
মোর শ্বেতশুভ্র অন্তররমহল
তোমা-বিনে রূপ পাবে না।

***

 হে সুন্দর

 

পুষ্পে পুষ্পে পুষ্পিতা বসন্ত কানন
সুন্দর জীবন হোক অক্ষয় যৌবন
দূর হোক দীর্ঘশ্বাস ঘুচুক বেদনা
আসুক জীবনসাথী অনন্ত যৌবনা।
দিন হোক কর্মময় নিদ্রা রজনীতে
পাশে থাক সুলগ্না বাহু বন্ধনীতে
নব-বারতা নিয়ে আসুক প্রভাত
অধরা ধরা দিক জানাই শুভ রাত।

 

 

 

 

 

 

 

 

আহবান:

✍ অনুপম ভট্টাচার্য  

আবার এসো জ্যৈষ্ঠের খরতাপ হয়ে,
আষাঢ়ে বাদল নামিয়ে ধুয়ে দিও শ্রাবণের জলধারায়।
কদমবনে ফুটে থেকো মোহনীয় দর্শনে,
কেয়াবনে শুভ্রতা ছড়িও লাস্যময়ী হয়ে।
শরতের শিউলিমালা হয়ে জড়িয়ে থেকো গলে,
শুভ্র মেঘমালা হয়ে দ্যুতি ছড়িও গগনময়।
অঘ্রাণের পাকা ধান হয়ে ভরিয়ে দিও কৃষাণের গোলা,
ভোরের হালকা কুয়াশায় শুনিও শীতের আগমনী।
শীতের হিমেল হাওয়ায় রুক্ষ্ম করে তোলো প্রকৃতি,
ধুমায়িত চায়ের পেয়ালায় থেকো তৃপ্তি হয়ে।
ফাগুনবেলায় এসো কোকিলকণ্ঠ হয়ে,
আগুনরাঙা পলাশ,শিমুল হয়ে ফুটে থেকো বৃক্ষশাখায়।
ক্ষণিকের তরে নয়,
অহর্নিশি বিচরণ করো স্বপ্নসারথী হয়ে।