টরন্টো,  ১২ই কার্তিক, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ, নভো সংখ্যা ৩৭ 
              
হোমপেজ সম্পাদকীয় পাঠক পরিষদের কথা কবিতা ছোট গল্প ধারাবাহিক সাহিত্য সংবাদ ভ্রমণ কাহিনি নিবন্ধ প্রেমপত্র বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও প্রকৌশল আবৃত্তি / কণ্ঠসঙ্গীত পাঠাগার আর্কাইভ লেখক পরিচিতি যোগাযোগ

কার্তিকের কুয়াশা

সম্পাদকীয়

 

 

কার্তিকের কুয়াশার এবারের এই কার্তিকী সংখ্যা নিবেদন করা হচ্ছে রূপসী বাংলার কবি, নির্জনতম কবি, শুদ্ধতম কবি জীবনানন্দ দাশের আটষট্টিতম মৃত্যু বার্ষিকীতে শ্রদ্ধা জানাতে। কবি লোকান্তরিত হয়েছেন ৫ই কার্তিক, ১৩৬১ বঙ্গাব্দ ।

 

আমাদের মাসিক সাহিত্য পত্রিকাটির নাম ধার করা প্রাণের কবি জীবনান্দ দাশের কাছেই। কার্তিকেই নবান্ন, কার্তিকেই কুয়াশা। আমার প্রধান উদ্দেশ্য ছিল প্রতিষ্ঠিত কবি-সাহিত্যিকের বদলে সেইসব প্রতিভার খোঁজ করা যাঁরা নিজেকে আড়াল করে লুকিয়ে রেখেছেন কুয়াশায়, যাঁদের সাহিত্য ফসলে নবান্নের মতো উৎসব মুখরিত হয়ে উঠতে পারে বাংলা সাহিত্য। যাঁরা লিখবেন এমন কিছু যা আগে অন্য কেউ লেখেন নি, লিখবেন এমনভাবে যেভাবে আর কেউ লেখেননি । এমন কিছু ভাববেন যা অন্য কেউ ঐভাবে ভাবেননি। তাঁদের বিচরণ তাঁদেরই সৃষ্ট অদ্ভুত এক কুয়াশায়। এইসব ভেবেই কার্তিকের কুয়াশা নামটি উপযুক্ত মনে হয়েছিল ।

 

জীবনানন্দের 'কবিতার আত্মা'র আত্মীয় সকলেই, তবে তাঁর কবিতার যে শরীর জাগিয়ে তোলে তাঁর কবিতার এই আত্মাকে, সেই ছন্দ-বিষয়ে বলতে গেলে প্রায় অজ্ঞই ছিলাম। তাঁর প্রকাশিত কবিতার সংখ্যা ৩৫২। এর মধ্যে গদ্যছন্দে লেখা মাত্র ২৪টি। অক্ষরবৃত্তে লেখা ২৭৫টি, মাত্রাবৃত্তে ১৬টি আর স্বরবৃত্তে ৩৭টি। অক্ষরবৃত্তকে তিনি 'পয়ার' বলতেন। জীবনানন্দ বাংলা সাহিত্যে অক্ষরবৃত্ত ছন্দের গুরুত্ব বোঝাতে বলেছেন, "অন্য কোনো ছন্দ যে পয়ারের এই শীর্ষদেশী মাহাত্ম্য ও গহনতার স্থান নিতে পারে না, রবীন্দ্রনাথ ও রবীন্দ্রনাথের অগ্রজ প্রধান কবিদের রচনায় তা স্বতঃপ্রমাণিত হয়ে রয়েছে। "

 

'পাত পাত পদ্য লেখা' শিরোনামে একটি নিবন্ধ প্রকাশিত হল এ সংখ্যায়। লেখ্যটি আমারই। মাত্রাবৃত্ত ছন্দের কলা কৌশল যতটা বুঝেছি তাই সাদা-সহজ ভাষায় লেখা, আশা করি পাঠক বুঝবেন, উপকৃত হবেন, ছন্দের মৌচাকে মধু মেখে প্রীতিকর কবিতা লেখায় অনুপ্রাণিত হবেন ।
বরাবরের মতোই রত্না চক্রবর্তী ও জয়া চক্রবর্তী সোমার অসাধারণ গল্প ও কবিতা 'কাকু'র (কার্তিকের কুয়াশার) মান বর্ধন করে চলেছে এ সংখ্যায়ও। বহুমুখী প্রতিভার শশীমুখী শ্রীমতী নীলাঞ্জনা সরকারের ছোটগল্প 'কাকু'র শ্রীবৃদ্ধিই করেছে বরাবরের মতোই । কার্তিকের নীল কুয়াশায় প্রণব ভট্টাচার্যের কাব্যরস পান করার সুযোগও পাচ্ছেন পাঠক-পাঠিকা। আছেন ড. ফেরদৌসী বেগম, আছেন অনুপম ভট্টাচার্য । তনুশ্রী সামন্তের উপস্থিতি আমাদের এক পরম পাওয়া। রয়েছে ম্যাক আজাদের কবিতা। সবশেষে হলেও জান্নাতুন নাঈম প্রমির অতুচ্ছ প্রেমপত্র ছাপা হল। আশা করি পাঠকের ভালো লাগবে।

 

 

টরন্টো, ১২ই কার্তিক, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ




 

সাইদুজ্জামান, টরন্টো, কানাডা।