রত্না চক্রবর্তী
২৬.৭.২২
এই পুরোনো পাড়ায় আসতে পুরোনো বাড়িতে বসে এতকালের বন্ধুর সস্থে আড্ডা দিতে
অখিলবাবুর বড় ভালো লাগে। এখানে এলে তিনি যেন প্রাণ ফিরে পান। প্রায়দু-বছর
হলো ওনারা নতুন পাড়ায় ফ্ল্যাট নিয়ে উঠে গেছেন। সাজানো গোছানো ঝকঝকে বাড়ি
আকাশী-সাদা রঙের আকাশের কাছাকাছি অনেকটা, চারতলা! তবে মাটির থেকে অনেকটা
দূরে। সুন্দর গাছ দিয়ে সাজানো লন কিন্তু সেই বাড়ির চেয়ে এই চার ভাড়াটে এক
উঠান, শ্যাওলা ধরা কলতলা খুপরি খুপরি আধা-অন্ধকার ঘরের এই বাড়িই তাকে টানে
বেশী। তাই তিনি প্রতিদিনই ছেলে-বৌ অফিস বেড়িয়ে যাবার পর এ বাড়িতে চলে আসেন,
বিপুলের ঘরে। পাশাপাশি চল্লিশ বছর কাটিয়েছেন। বিপুলও তো অনেক দিন রিটায়ার
করেছে।দুই নিস্কর্মায় মিলে বড় সুন্দর সময় কাটে। বিপুলের ভাগ্যটাও বড় ভালো,
এমন গুনী লক্ষ্মীশ্রী বৌমা পাওয়া ভাগ্যে থাকা চাই। বাড়িতে ফ্রিজে ঝোল
তরকারী রাখা থাকে, খাওয়ার টেবিলে ভাত ঢাকা থাকে কিন্তু অখিলবাবু খান না।
রোজই টিফিনকৌটো ভরে ভাত নিয়ে হাজির হন বিপুলের বাড়ি। বৌমার রান্না অমৃত।
শুক্তো, এঁচোড়, মোচার ঘন্ট অমনটি এ যুগে কেউ পারবে না। কুঁচো-চিংড়ি দিয়ে
লাউ যা বানায় মুখে লেগে থাকে। চালতার টকটা তো ঠিক তার মায়ের মত। আর বাপের
বাড়ি অনেক দূরে, অবস্থাও তেমন ভালো নয় বলে বাপের বাড়ি যাওয়ার ঝামেলা নেই।
নাতনীকে বিপুলই ইস্কুলে দিয়ে আসে। বৌমা ঘরেই থাকে, একহাতে সংসার সামলায়।
দীর্ঘশ্বাস ফেলেন অখিলবাবু। সন্ধ্যাবেলা দুহাত তাস খেলে বাড়ি ফেরেন তিনি।
বিপুলবাবু তখন আসেন অখিলবাবুকে ছাড়তে নাতনীর হাত ধরে, একটু হাঁটা হয়, বৌমার
কাজ সারার সুবিধাও হয়। কি সুন্দর জায়গায় বাড়িটা কিনেছে! দেখলেও চোখ জুড়ায়।
বাড়ির সামনেই সুন্দর পার্ক, অখিলের বারান্দায় দাঁড়ালেই দেখা যায়।কি বড় বড়
জানলা!কিব্যবস্থা, আলো ঢোকে কিন্তু রোদ ঢোকে না, তুমি সবাইকে দেখতে পাবে
কিন্তু তোমায় কেউ দেখতে পাবে না। কোন শব্দ নেই, ক্যাচক্যাচানি, কোঁদল নেই,
কি শান্তি। বুক ভরে শ্বাস নেন নাকি দীর্ঘশ্বাস ফেলেন বোঝা যায় না। অখিলের
ব্যালকনিতে বসে দামী কাপে সুগন্ধি চায়ে চুমুক দেন। অখিলের নাতি ক্রেশে
থাকে, বৌমা অফিস থেকে আসার সময় নিয়ে আসে। বূড়ো শ্বশুরের ঘাড়ে কোন দায়িত্ব
নেই। খানিক বসতে খুব ভালো লাগে কিন্তু নাতনির টিউটর আসবে উঠতে হয়। ভাবেন
আসলে অখিলের উপর লক্ষ্মীর অসীম দয়া। নাহলে তার বাবুয়া আর অখিলের বাবান তো
একই বয়সী, একই চাকরি করে, ছোটখাট প্রাইভেট ফার্মে। কিন্তু ওর বৌমা ভালো
সরকারী চাকরী করা মেয়ে। ওদের লাভম্যারেজ। বৌমাই লোনে ফ্ল্যাটটা কিনেছে। বড়
বিবেচক মেয়ে, শ্বশুরকে ফেলে চলে যায় নি। সকাল আটটায় অফিস যায়, অনেকটা দূর
তো। অখিলের উপর কোন কাজ চাপায় নি, হোম ডেলিভারি খাবার আসে, ছুটির দিনে ওরা
বাইরে খেতে যায় আর অখিলের খাবারটাও নিয়ে আসে। খুব পরিশ্রমি মেয়ে,আবার
প্রমোশনের পড়া ও পড়ছে। সংসারকে দাঁড় করাবার আপ্রাণ চেষ্টা।বড় লক্ষ্মীমন্ত
মেয়ে ।।
(নতুনদের জন্য)
চক্রবৎ
রত্না চক্রবর্তী
২১.৭.২২ রত্না চক্রবর্তী ৪.৭.২২
সবিতা হাঁ হাঁ করে উঠল " এই ওই শাড়িটা ট্রেতে দিস না, ওটা পাঠাব না
টিঙ্কু ট্রে সাজাচ্ছিল বল্ল " কেন কাকিমা এটা লাল-হলুদ ছাপা তো, এটা
দিয়ে প্রজাপতি বানালে দারুন হবে। "
সবিতা ব্যস্ত হয়ে বলল "না না, ছাপা শাড়ি একটাও পাঠাবো না, ওতে মান থাকে
না, তাছাড়া আমার দিদিমা বলতেন ছাপা শাড়ি আসলে থান ছাপানো, বিয়ে তে দেব
না, তুই লাল হলুদ তাঁত বেছে নে "।
টিঙ্কু ছাপা শাড়ীটা রেখে দিল, ফিসফিস করে বৈদেহীকে বলল, " এই আমি তো
শাড়ির লেবেলটা ছিঁড়ে ফেলেছি, কি হবে রে ? "
কনেবেশী বৈদেহী হেসে বলে " চেপে যা,লেবেলটা একটু চেপে লাগিয়ে দে, ও কেউ
বুঝবে না। " টিঙ্কু কায়দা করে বসাবার চেষ্টা করে বলল " ইস একটু বেঁকে
গেল, ফেলে দিয়েছিলাম তো, কর্ণারে একটু নেলপালিশের দাগ লেগে আছে "।
বৈদেহী উদার হাসি হেসে বলল, " ছাড়তো" বৈদেহীর ফুলশয্যার তত্ত্ব সাজানো
হচ্ছে।
সবিতা আর একবার উঁকি দিয়ে দেখে গেল, না ওই শাড়ীটা দেয় নি। সবিতার মনে
বড় ভয়, ওই শাড়িটা দত্তগিন্নি বিয়েতে দিয়েছে, আইবুড়োভাত খাইয়ে। পাঁচটা
মেয়ের একটার ও বিয়ে থা দিতে পারে নি। বড়-মেজোর আর হবে না বুড়িয়ে গেছে।
আর গুলোর চেষ্টা চলছে, যেটা লাগে। দেখতে শুনতে ভালো নয়। তার মেয়ের উপর
খুব হিংসা । মেয়ের বিয়ের জন্য এ ঠাকুরবাড়ি, ওঠাকুরবাড়ি করে বেড়াচ্ছে।
ওটা নির্ঘাত তুকগুণের শাড়ি, নইলে ওরা যা কিপটে তাতে আদিখ্যেতা করে
আইবুড়ো ভাত খাওয়াতো না। সবিতা অবশ্য কায়দা করে পাঠায়নি। এসব অবশ্য
কাউকে বলার নয়, এমনিতেই লোকে বলে তার নাকি তুকগুন তুকগুন বাই। ভালোয়
ভালোয় বিয়েটা হয়ে গেলে হয়। বিয়ের পর মেয়ে এসে ঘুরে গেল আহ্লাদী আহ্লাদী
মুখে, সবিতার প্রাণ জুড়ালো। টিঙ্কুটা অনেক খেটেছে সবিতা ভাবলো, মেয়েটা
বৈদেহীর খুব বন্ধু, ওকে একটা কিছু দেওয়া দরকার। সবিতা লাল-হুলুদ
ছাপাটাই দেবে ঠিক করল। টিঙ্কুর ভালো বিয়ে হয়েছে,ওর বিয়ে ভেঙে যাবার ভয়
নেই, ওটা ওর পছন্দ ছিল। সবিতা শাড়িটা টিঙ্কুকে দিল।
টিঙ্কুর ভালোই হল, সামনে তিনটে নিমন্ত্রণ, একটাতে চালান করে দিলে
সাশ্রয় হবে। টিঙ্কু তারকেশ্বরএর ননদ শিখার বিয়েতে শাড়িটা দিল।
শিখার মা বাবা নেই ওর বড় ভাই মানে টিঙ্কুর ভাসুর ই লোনটোন করে বিয়েটা
দিয়েছেন। তাই শিখার বড়বৌদির এই নিয়ে একটু ক্ষোভ ছিল। এই ধার তো তার
স্বামী ই শোধ করবে? তার দুই ছেলের তো আরও একটু ভালো ব্যবস্থা করা যেত।
বড়বৌদি প্রতিভার হাতেই বিয়ের সব গোছগাছ দেখাশোনার ভার। সে বেছে বেছে
খান-কয়েক শাড়ি শিখাকে দিয়ে বাকি শাড়ি রেখে দিল। এক বছর ননদের তত্ত্ব
টানতে হবে তাছাড়া তার বাপের বাড়ির কয়জনাকে হাত তুলে দিতেথুতে পারবে।
অনেককেই দিতে ইচ্ছা যায়, কিনে দেওয়া হয় না। তার বড় মাসীর ছেলে বিয়ের
পরে বৌ নিয়ে বাইরে চলে গিয়েছিল, বৌ দেখা হয় নি। এবার একটা শাড়ি হাতে
যাবে। প্রতিমা হালকা রঙের ক'টা শাড়ি নিজের জন্য আর নিজের মায়ের জন্য
রাখল। খেলো শাড়িগুলো রাখল কাজের লোকেদের পূজোয় দিতে হবে বলে। লাল হলুদ
ছাপাটা বাছলো মামাতো ভাইয়ের বৌ সুদেষ্ণার জন্য। খোলটা ভালো।
সুদেষ্ণা ডিভানের উপর শাড়ি বিছিয়ে দেখছে। ওর বন্ধু এষা ও সঙ্গে আছে।
সুদেষ্ণা নাক কুঁচকে বলল " কি যে সব রুচি! মা গো! এইসব শাড়ি কেউ পরে?
আমি তো শাড়িই পরিনা, যদিও কখনও পড়ি তো পিওর সিল্ক নয়ত ঢাকাই টাকাই, এ
গুলো রাবিশ। "
এষা হেসে বলল " দেখছি দাঁড়া প্রীতমের সঙ্গে বন্দোবস্ত করছি, ওর তো শাড়ি
চাদরের ব্যবসা, অপছন্দেরগুলো তুই চালান করে ভালো বেডকভার নিতে পারবি,
বম্বে ডাইং প্রিন্টগুলো দারুণ "।
নিমন্ত্রণ কারো কারো ভালো লাগে কিন্তু সুজিতের ভালো লাগে না। তাও যদি
একমাসে গোটা তিনেক পড়ে! এই সেদিন শালার বিয়েতে হল, কানের দুল খসল, এবার
সাধ। একটা শাড়ি তো দিতেই হবে। তাও সুজিতের বৌ একটু বোঝদার আছে, দামী
শাড়ির বায়না নেই। প্রীতমের কাছ থেকে ইনস্টলমেন্টে লালহলুদ একটা সুন্দর
ছাপা কিনেছে। সাধে লাল হলুদ সুলক্ষণ ।
টিঙ্কু একগাদা শাড়ির মাঝে হতভম্ব হয়ে বসে আছে। কাল বৈদেহীর সাধ ছিল। আজ
দুপুরে ওরা শাড়িগুলো গুছিয়ে আলমারিতে ঢোকাচ্ছে
প্রথমে লালহলুদ শাড়িটা দেখে হাসি পেয়েছিল, সেই আগের শাড়ির কথা মনে করে।
হাতে নিয়ে বৈদেহীকে সবে বলতে যাচ্ছিল, তখনই দেখল স্টিকারটা বাঁকা করে
লাগানো আর তাতে সেই নেলপালিশের দাগটা!!!
নতুনদের জন্য আবার।
সময়
বিভাদেবী আর পারেন না। নিজের সময় বলতে কি তিনি কিছুই পাবেন না এজীবনে? সেই
কোন বয়েসে বৌ হয়ে সংসারে ঢুকেছিলেন। তখন এমন গ্যাসের রান্না ছিল না।উনানে
যৌথ পরিবারের পনেরো জনের রান্না,কাপড়কাচা,গুল দেওয়া,শিলে বাটনা করা এসব
করতে করতেই গোটা দিন চলে যেত। একটু যে নিজের মত করে টেবিলক্লথে ফুল তুলবেন
কিম্বা চিত্রহার শুনবেন তেমন সুযোগ তার হয়নি। তারপর একসময় শ্বাশুড়ী মারা
গেলেন। সংসারে সব আলাদা আলাদা হয়ে গেল। বিভাদেবী তখনও একবার ভেবেছিলেন এই
বার তিনি একটু নিজের সময় পাবেন। কিন্তু তা আর হল কই। বিয়ে দিলেন ছেলের।
বৌমা চাকরী করে।বিভাদেবীর আপত্তি ছিল না। বৌমা যদি ম্যানেজ করতে পারে ঘরে
বাইরে তবে তার কি বলার আছে।বৌমা ভারী ভালো মেয়ে।সংসার সামলে দিব্বি চাকরী
করছিল।এমনকি একটা বাসনমাজা আর ঘর ধোয়ামোছার লোকও রেখেছিল। কিন্তু বিভার
কপালে শান্তি করে বসা লেখা নেই।তাই তো বছর ঘুরতেই নাতি হল। তিনমাসের মাথায়
বৌমা বাপেরবাড়ি থেকে সেই যে এল সেই থেকে আর নি:শ্বাস ফেলার সময় পায়নি বিভা।
নাতির সব কাজ তার নিজের হাতে অলিখিত নিয়মেই চলে এসেছে। আর তারপর যখন বৌমা
আবার অফিস জয়েন করল তখন তো কথাই নেই। নিজের সময় তো দূর একটু ঘুমোনোর সময়ও
পর্যন্ত পান না তিনি।নাতি রাত কাঁদুনে। রাতে ঘুমায় না।বৌমাকে সকালে উঠতে
হয়। তাই বিভা মানবিকতার খাতিরেই রাতে নাতি নিয়ে জাগেন। নাতি দিনে ঘুমায়
কিন্তু তখন আর বিভার শোবার সময় থাকে না। ভেবেছিলেন নাতি একটু বড় হলে হয়ত
সময় পাবেন। কিন্তু নাতি যত বড় হল তার সময় পাওয়া তো দূর উলটে সময় কমতে লাগল।
নাতিকে ঘুম থেকে তুলে স্কুলে পাঠানো। ঘন্টা দুয়েকের মধ্যে আবার আনতে যাওয়া।
এনেই তার পিছনে ছুটে ছুটে টিফিন খাওয়ানো। স্নান করানো। হোমওয়ার্ক করানো।
দুপুরের খাওয়ানো। একটু দিবানিদ্রার সময়ও পান না বিভা। নাতি দুপুরে গল্প
শুনে ঘুমায়। গল্প বলতে বলতে ঘুমে চোখ ঢুলে আসে। কিন্তু নাতি যতক্ষণ চোখ না
বোজে ততক্ষণ রেহাই নেই। সারাটা বিকেলও কাটে নাতির পিছনে দৌড়ে দৌড়ে। অসম্ভব
ভালোবাসার সাথে অসম্ভব ক্লান্তিতে তিনি যেন ঠিক বুঝে উঠতে পারেন না কি চান।
গজ গজ করেন নিজের মনেই বিভা-"বুড়ো বয়েসে এখন আমি কচি ছেলের মায়ের মত খেটে
মরি। আর কত্তা গিন্নি উড়ে উড়ে বেড়াক।বলি ছেলে যখন হয়েছে তখন দায়িত্ব নে। সব
আমার ঘাড়ে কেন রে বাবা।"
ছেলে বৌ যে কথাগুলো শুনতে পায় না তা নয়। শুনে রাগও করে না।লজ্জাই পায়।
সত্যি তো মায়ের কষ্টটা তারা বোঝে। কিন্তু কি করবে তারা। প্রাইভেট জবে তেমন
মাইনেও না যে আয়া রাখবে। তাও হয়ত আর একটা কাজের লোক রাখত। কিন্তু বিভাদেবীর
কড়া নির্দেশ কাজের লোকের কাছে বাচ্চা মানুষ হবে না। অগত্যা.... সুযোগটা
নিজে থেকেই হাতে এসে যায় একদিন। বিভার বৌমার বড়বোনের শ্বশুরবাড়িতে একটা
ঝামেলা অশান্তি হয়।বৌমার বড়বোন শ্রাবণী ভাড়া বাড়ি দেখে আলাদা হয়ে যায়। ঘর
ভাড়া নেয় বিভাদের বাড়ির সামনের বাড়িতে। বৌমাই দেখে দেয়।শ্রাবণীরও এক ছেলে।
বিভার নাতির চেয়ে একবছরের বড়। শ্রাবনীকে বৌমাই বলে -" দিদি বুবাইকে নিয়ে মা
আর পেরে ওঠেন না। তুই তো এখন এখানেই এসে গেছিস।এবার মা নিজের সময় পাবে।"
সত্যি এখন বিভাদেবীর প্রচুর সময়।বুবাই আর শ্রাবণীর ছেলে টুবাই এক স্কুলে
পড়ে।সকালে টিফিন করে দেওয়াটাই যা বিভার কাজ।শ্রাবণীই দুজনকে দিয়ে আসে।
নিয়েও আসে।ফিরে হোমওয়ার্ক করায়।দুজনকে স্নানও করায়। বুবাই নিজেই টুবাইদাদার
সঙ্গে খেলবে বলে মাসিমনির ঘর থেকে আসতে চায় না।বিভাদেবী দুপুরে ভাত খাওয়ার
সময় ডাকেন। বুবাই বলে-"ও ঠাম্মি প্লিজ আমি টুবাইদাদার সঙ্গে ডোরেমন দেখতে
দেখতে ভাত খাব।একটুও দুষ্টু করব না প্রমিশ।"
শ্রাবণী হাসে।বলে-"আপনাকে অনেক জ্বালিয়েছে মাসীমা।এই বয়েসে কম ধকল
গেছে!এবার একটু বিশ্রাম নিন তো।"
বিভা তার দীর্ঘদিন না যাওয়া ননদের বাড়ি যায়।দুদিন থাকে।সাতদিন থাকবে ভেবে
গিয়েছিল।কিন্তু বারবার বুবাইএর মুখটা মনে পরে। দুদিনের মাথাতেই ফিরে আসে।
দুপুরে এখন মাসিমনির কাছেই ঘুমায় বুবাই। টুবাইদাদা আর সে একসঙ্গে।
কিন্তু বিভার দুপুরে এখনও ঘুম আসে না।কেন কে জানে? এখন তো বুবাইও আর
জ্বালায় না। কত্ত সময় তার।আচার করে বড়ি দিয়েও তার সময় ফুরায় না।তবু কেন মনে
হয় ভালো নেই বিভা।কি যেন হারিয়ে গেছে তার। এত সময় তার কি হবে, কি ফাঁকা
ফাঁকা লাগে। এত সময় তাকে যেন কেমন অবসন্ন করে তোলে।।