তারা ছিল তারা
রত্না চক্রবর্তী
১৬.২.২২
উল্কাপাত তো একেই বলে
চলছে তারাখসা,
সুর জগতের বাহক ধারক
তিন সার্থক যশা।
সুরজগত যেন সুরহীন হয়
যাচ্ছে প্রতিক্ষণ,
আশঙ্কা আর বেদনায়
কেঁদে ওঠে তাই মন।।
দিগন্তের ওপাশে,,,,,,,,,
-ফেরদৌসী বেগম
ফিরবো না বলেই তো
ঘর ছাড়ি প্রতিদিন
হারিয়ে যাবো বলেই পা বাড়াই
শস্য ক্ষেত, মাঠ, প্রান্তর, নীল দিগন্ত
হাতছানি দেয়।
মাঠের পাশের ঐ শেষ সীমান্ত
যেখানে আকাশ চুপ চাপ বসে থাকে
নির্ভার, নিমিলেষ
পলাশের পাশে।
আগুন পলাশ শুধুই হাসে
হেসে গড়িয়ে যায় সবুজ ঘাসে
ঝরিয়ে শত দল।
আমিও চাই ঐখানে যেতে
ফিরবো না কোনদিন
রয়ে যাবো প্রকৃতির কোল ঘেসে
বেহিসাবি দিন ক্ষণ যত যা আছে
কাটুক না এ জীবন
এভাবে। এ বেশে।
রাজশাহী। ১৫. ০২.২০২২
গানের রানী
রত্না চক্রবর্তী
৬.২.২২
গানের রানী গেলে চলে
দেবীর নিরঞ্জনে,
উপযুক্ত দিনটা ছিল
সে বিদায়ের ক্ষনে।
সরস্বতীর বরপুত্রী
তাইতো দেবীর সাথে
গেলেন তিনি অমরলোকে
দেবীর আশিষ মাথে।
তবু তুমি কখনোও
যাবে না গো দূর
যুগে যুগে রয়ে যাবে
তোমার মধুর সুর।
আজ বুঝি বসন্ত.......
সামিদা খাতুন
তুমি আজ সর্বত্রই এসেছা বসন্ত?
ওই যে রেললাইনের ধারে রাস্তায় বসবাসরত
হকারের ঘরে, ভিক্ষার থালা হাতে জীবনের
শেষ প্রান্তে দাঁড়িয়ে থাকা গোল চত্বরের নিরুপায়
ওই বুড়ি মার ঘরে, জেলে পাড়ার রানুদের ঘরে
মাছ ধরা পরে নি বলে যারা অনাহারে ছিলো।
তুমি কি আজ এসেছিলে বসন্ত....
ডাস্টবিন থেকে প্লাস্টিক কুড়ানো সেই বালকের ঘরে?
হাসপাতালের বিছানায় মরণ যন্ত্রনায় কাতরানো
সেই অসুস্থ মানুষ টি কি জানে বসন্তের মানে?
তুমি কি আজ তার পরিবারে এসেছিলে?
তুমি কি চার দেয়ালের ওই বন্ধ কারাগারে আজ এসেছো
তারা কি আজ তোমায় বরণ করেছে?
তোমার উপস্থিত কি আজ তারা উপলব্ধি করতে পেরেছে?
তুমি কি আজ এসেছো বসন্ত.....
জন্মান্ধ সেই তরুণের মনের ঘরে?
তোমার রঙ,রুপ, ঐশ্বর্যের রঙিন প্রচ্ছদে প্রকৃতিকে যে আচ্ছাদিত করেছো,
তা ওই তরুণের মন কে স্পর্শ করেছে?
সে কি আজ তোমায় বরণ করেছে বসন্ত?
তুমি কি আজ সত্যিই সর্বত্র এসেছো .....
আমার মনের কোন এক কোণে তোমায় খুঁজলে
আজ পাবো তো বসন্ত?
কবিতা
✍ সাইদুজ্জামান
তুমি আমার হঠাৎ দেখা সমুদ্রের খড়-কুটো,
জীবন মরণ দুটোই তুমি - তুমিই দুটো।
ডুবেই ছিলাম, ডুবেই যেতাম, কার কী বা যায় আসে?
জলের তলে কাঁদছে মানুষ, কেইবা দেখে, দাঁড়ায় পাশে?
তোমার যেমন সাধ্য নেই ভাসিয়ে আমায় রাখো,
কোন ভরসা তোমায় দেব, আমার অক্ষমতা লাখো ।
বসন্ত এসে গেছে.......
ফেরদৌসী বেগম
বাতাসে ভেসেছে শিমুলের ঘ্রাণ
হলুদে হলুদে সেজেছে পথ
বাজুতে বাঁধা গাঁদা মাথায় গোলাপ
যেও না অভিমানী সুবেশিনী
বসন্ত এসে গেছে।
বসন্ত এসে গেছে করিডোরে
কোনাকুনি হাতে হাতে মেহেদির ছোঁয়াতে
লাল টিপে নীল শার্টে
সকালের রোদ্দুরে
বিদায়ের সুরে কাঁদে কুয়াশার মেঘ যে।
বসন্ত এসে গেছে পলাশের বনে বনে
রবীন্দ্র সরোবরে সরবে
বাহারী শাড়িতে, আল্পনার রংয়েতে
টুক টাক পাতা পড়ে শীতের শেষ যে
বসন্ত এসে গেছে ময়ূরের নৃত্যে।
রাজশাহী/ ১৩.০২.২০২২
মাতৃভাষা
মধুবন্তী আইচ
বাংলা আমার মাতৃভাষা
বাঙালিয়ানা আমার রীতি
বাংলা আমার জীবনকাব্য
বাংলাই যে প্রাণের গীতি
বাংলায় শিখি প্রথম বুলি
বাংলা আমার পরম জ্ঞান
বাংলাতেই তো ডাকি মা'কে
বাংলা শুনেই জুড়ায় প্রাণ
বাংলা আমার ভোরের শিশির
বাংলায় ডুব দিলেই পূর্ণ প্রয়াগ-স্নান
বাংলা আমায় দেখায় স্বপন
বাংলা আমার গহনা রতন
বাংলা আমার মিঠে মেঠো সুর
বাংলা আমার ওম ছড়ানো শীতের দুপুর
বাংলা আমার বিদ্রোহী নজরুল
বাংলা আমার পল্লী-প্রেমিক জীবনানন্দ
বাংলাতেই পূজি রবি ঠাকুর
বাংলা আমার দুর্গাপুজো
বাংলা আমার দোল উৎসব
বাংলা আমার ঈদ রমজান
বাংলাই মোদের খুশীর পরব
বাংলা প্রেমের ভাটিয়ালি টান
বাংলা আমার বাগেশ্রী তান
বাংলা আমার বাংলা তোমার
বাঙালি মোরা বীরের জাতি
বাংলা মোদের জীবনকাব্য
বাংলাতেই গাই প্রাণের গীতি।