টরন্টো, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২২, নভো সংখ্যা ২৯ 
              
হোমপেজ সম্পাদকীয় পাঠক পরিষদের কথা কবিতা ছোট গল্প ধারাবাহিক সাহিত্য সংবাদ ভ্রমণ কাহিনি বিশেষ নিবন্ধ বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও প্রকৌশল আবৃত্তি / কণ্ঠসঙ্গীত পাঠাগার আর্কাইভ লেখক পরিচিতি যোগাযোগ

কার্তিকের কুয়াশা

সম্পাদকীয়

 

বাংলা আমার মাতৃভাষা
বাঙালিয়ানা আমার রীতি
বাংলা আমার জীবনকাব্য
বাংলাই প্রাণের গীতি...

ফেব্রুয়ারি মানেই মাতৃভাষার মাস, বাংলা ভাষার মাস। মাতৃদুগ্ধসম মিষ্ট এই বাংলা ভাষাকে যখন বর্জন করার হুমকি দেওয়া হল, যখন এই ভাষার অস্তিত্ব বিলীন করে দেওয়ার ষড়যন্ত্র রচিত হলো, তখন স্বাভাবিক ভাবেই এই ভাষার সন্তানদের বুকে বাজলো বিদ্রোহের দুন্দুভি এবং হাতে জ্বললো মাতৃভাষাকে বাঁচিয়ে রাখার সংগ্রামের মশাল ১৯৫২ সালে।

বাঙালি আজ বিশ্ব জয় করেছে প্রায় সর্বক্ষেত্রে। কর্মক্ষেত্রে, বিদ্যাজগতে সর্বত্রই বাঙালির জয়গান শোনা যায় বর্তমানকালে। বাঙালি যেখানেই যায়, সেখানেই নিজেদের পুজো পরব অনুষ্ঠান নিয়ে একেবারে জাঁকিয়ে বসে। কিন্তু, যে ভাষার নামে তাদের পরিচয়, সেই ভাষাকে তারা তাদের দৈনন্দিন জীবনের কোথায় স্থান দিয়েছে? একুশের স্ফুলিঙ্গ কি আজ নির্বাপিত নয়? বর্তমানে একুশে ফেব্রুয়ারি আমাদের মননকে কতটা প্রভাবিত করে?

আজ দেশ - ধর্ম নির্বিশেষে সমগ্র বিশ্বে বাংলাভাষী মানুষদের একটাই পরিচয় - তাঁরা বাঙালি। ১৯৯৯ সালের ১৭ই নভেম্বর বাংলার ভাষা আন্দোলনকে সম্মান এবং স্বীকৃতি জানিয়ে ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়। অন্য কোনও জাতির বা দেশের ভাষা কিন্তু এমন বিশ্ব জুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেনি! যে ভাষাকে কেন্দ্র করে একটি জাতি, একটি সংস্কৃতি জন্ম নিয়েছে, সেই ভাষা যেন কালের গহ্বরে লীন না হয়ে যায়, সেই জাতি যেন সমূলে উৎপাটিত না হয়, তারা যেন ভুলে না যায় পূর্বজদের রক্তে লেখা ইতিহাস, তাঁদের উত্তরসূরিরা যেন নিশান হাতে এগিয়ে চলে এক উজ্জ্বল ভোরের দিকে, একুশের মূল্যবোধ যেন সারা বছর আমাদের চেতনায় পরিব্যপ্তি লাভ করে, বাংলা ভাষা যেন জীবনের সকল ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত হয়, সেই চেষ্টাই করে যেতে হবে নিরন্তর। কার্তিকের কুয়াশা তার সৃষ্টির জন্মলগ্ন থেকে সেই প্রচেষ্টাতেই অঙ্গীকারবদ্ধ।

ভাষাদিবসে ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানানোর পাশাপাশি আমরা বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতির আরও কিছু বিদগ্ধজনকে স্মরণ করবো এই সংখ্যায়। এই মাসে তাঁদের জন্মদিবসে আমরা শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেছি কবি জীবনানন্দ দাশ, কবি সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত, কবি শঙ্খ ঘোষ, কবি আসাদ চৌধুরী, কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায়, কবি আখতারুজ্জামান ইলিয়াস এবং কবি রফিক আজাদ। এছাড়া, লেখক সৈয়দ মুজতবা আলিকে আমরা স্মরণ করেছি তাঁর প্রয়াণ দিবসে। উপর্যুপুরি আমরা হারিয়েছি সঙ্গীত জগতের দুই দিকপাল মহিয়ষী প্রতিভাকে - সুরসম্রাজ্ঞী লতা মঙ্গেশকর এবং বাংলার শ্রীমতী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়।

প্রতিবারের মতোই কার্তিকের কুয়াশার এই মাসের সংখ্যাও নিয়ে এসেছে লেখক, লেখিকা এবং শিল্পীদের সৃষ্ট মূল্যবান রত্নসম্ভার। আশা করবো সকল পাঠকের ভালো লাগবে পড়তে। সকলে ভালো থাকুন।

ধন্যবাদান্তে -

 

মধুবন্তী আইচ 
গুজরাট, ভারতবর্ষ