সাইদুজ্জামান
শিহাবের ক্লাস-বি আরভি কিংস্টন রোড থেকে ডানে ব্রিমলি রোডে ঢুকতেই মুশলধারে
বৃষ্টি শুরু হয়ে গেল। মার্সিডিজ স্প্রিন্টারে নির্মিত এই মোটরবাড়িতেই
শিহাবের ফুলটাইম জীবনযাপন। ক্লাস-বি অন্যসব ক্লাস থেকে ছোটো এবং বাইরে থেকে
প্রায় বোঝাই যায় না এটা কোনো মোটর ভবন। সাধারণ ভ্যান বলেই ভুল হয়। লম্বায়
উনিশ ফুট পাঁচ ইঞ্চি, চওড়ায় সাত ফুট এক ইঞ্চি। ভেতরে কুইন সাইজের একটা বেড
আছে, কিচেন আছে, বাথরুম আছে। ফ্রিজ, স্টোভ, টেবিলচেয়ার, টিভি, কম্পিউটার
সবই আছে। মেঝে থেকে ছাদ পর্যন্ত ছ-ফুটের একটু বেশি। দুপাশে দেয়াল জুড়ে
দীর্ঘ জানালা আছে প্রকৃতি দেখার জন্য, কাব্য করার জন্য। দিনের বেলায় এটাই
শিহাবের অফিস, রাতে বাসভবন। অন্টারিও লেকের তীরে ব্লাফারস পার্কেই বুন্ডক
করার ইচ্ছে আজ রাতে। পার্কের পার্কিং লটে ঢুকতেই শিহাব দেখতে পেল বছর
তিরিশেক বয়সের একটি মেয়ে গাছের তলায় কাকভেজা হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। এরকম দৃশ্য এ
শহরে বিরল। প্রায় সবারই গাড়ি আছে। তাছাড়া কিংস্টন আর ব্রিমলির ইন্টারসেকশনে
বাসস্টপ, ওখান থেকে এতদূর হেঁটে এসেছে কি মেয়েটা ? আরভি পার্ক করে ড্রাইভিং
আসন থেকে উঠে পেছনে শয়নঘরের ভেতরকার দরজা খুলে শিহাব মেয়েটাকে উচ্চস্বরে
ডাকল - আসুন ভেতরে আসুন, আপনিতো নিউমোনিয়া বাঁধাবেন, এমনিতেই প্যানডেমিকের
সময়। প্রায় দ্বিধাহীনভাবেই উঠে এল মেয়েটি। প্যাসেঞ্জার সিট শয়নঘরের দিকে
ঘুরিয়ে মেয়েটির বসবার জায়গা করলেও শিহাব প্রথমে ক্লজেট থেকে তার ধোয়া একটা
টিশার্ট, একটা তোয়ালে এবং সাদা রঙের একটা বিছানার চাদর হাতে ধরিয়ে লাজুক
হেসে বলল: গতকালই ওগুলো কেচেছি, বাথরুমে ভেজা কাপড় বদলে এগুলো আপাতত পরে
আসুন। মেয়েটি সেরকম আপত্তি করল না। এরই মধ্যে শিহাব কফিমেকারে কফি
চাপিয়েছে, ফ্রিজ থেকে ভোদকার ছোট্ট একটি বোতল, দুটো চুয়াল্লিশ মিলিলিটারের
শট গ্লাস, শসা, টমেটো আর সামান্য কিছু খাবার টেবিলে সাজিয়ে বসে আছে।
লাল-সাদা টিশার্টের সাথে সাদা চাদর শাড়ির মতো গায়ে জড়িয়ে এসেছে মেয়েটি। ওর
চোখের রং সবুজ। ভালোই লাগছে। প্যাসেঞ্জার আসনে বসতে বসতে সে বলল: আমি
লিন্ডা। শিহাব বলল সে শিহাব। সবুজ শট গ্লাসে ফরাসি ভোদকা ঢেলে এগিয়ে দিল
লিন্ডার হাতে।
-আপনিতো শীতে কাঁপছেন, একটু গরম হয়ে নিন। তারপর আপনার গল্প শোনা যাবে। এই
বৃষ্টির ভেতর এখানে কী করতে এসেছেন?
সবুজ গ্লাস ঠোঁটে ছুঁয়ে লিন্ডা নির্দ্বিধায় গলাধঃকরণ করল বিবর্ণ তরল অগ্নি।
হাসিমাখা মুখে বলল: সে এক বড়ো গল্প। শোনাব ধীরে ধীরে।
শিহাব ভেবেছিল মেয়েটি হয়তো তাকে বাড়ি পর্যন্ত পৌঁছে দেবার জন্য অনুরোধ
করবে, কিন্তু লিন্ডার ভেতর সেরকম তাড়া দেখতে পেল না। বরং আলাপেই তার ঝোঁক।
লিন্ডা বলছে, শিহাব মনোযোগ দিয়ে শুনছে। এ শহরেই তার জন্ম এবং বেড়ে ওঠা।
পেশায় ডেন্টিস্টের সহকারী। ছোটো চাকরিই। পড়ালেখাও খুব বেশিদূর নয়।
হাইস্কুলেই প্রেম। স্কুল শেষ না হতেই জন্ম হয় মেয়ে ক্যাথরিনের। বয়ফ্রেন্ড
লিন্ডাকে বিয়ে করেনি শেষমেশ। শুরুতেই জীবন তাকে এক কঠিন চ্যালেঞ্জ ছুড়ে
দেয়। লিন্ডার ক্যাথরিন, আর ক্যাথরিনের লিন্ডা ছাড়া পৃথিবীতে আর কেউ নেই।
পড়ালেখার সময় আর পেল না লিন্ডা। ক্যাথরিন ধীরে ধীরে বড়ো হলো। অনেক কষ্ট করে
একটা বাড়িও কিনেছে লিন্ডা এই স্কারবোরোতেই। মা-মেয়ের মধ্যে মান-অভিমান
লেগেই আছে। মেয়ের অভিযোগ মা তাকে কিছুই দিতে পারেনি জীবনে। ওর বন্ধুদের কত
কী আছে ! ক্যাথরিনের এমনকি সাধারণ একটি বাবাও নেই । ক্যাথরিনের বয়ফ্রেন্ড
লিন্ডার বাড়িতেই উঠেছে। বাড়িতে লিন্ডার উপস্থিতি ক্যাথরিন বা তার বয়ফ্রেন্ড
কারোরই পছন্দ নয়। এ নিয়ে অশান্তির জের ধরেই দুদন্ড দম নিতে আজ বিকেলে
বেরিয়েছিল লিন্ডা। হঠাৎই বৃষ্টি নামল।
এবার শিহাবের পালা। লিন্ডা সরাসরি প্রশ্ন করে বসল: আপনি কি ফুলটাইম
মোটরবাড়িতেই থাকেন? থাকলে কেন এই বৈরাগ্য? আমি কোনো ইন্ডিয়ানকে এর আগে
পূর্ণকাল মোটরবাড়িতে বাস করতে দেখিনি।
শিহাব মৃদু হেসে বলল: আমার গল্পও ছোটোগল্প নয়। তবে সংক্ষেপেই বলছি। কানাডায়
প্রতিদিন হাজার হাজার অভিবাসী আসছে। তাদের অধিকাংশই প্রাপ্তবয়স্ক। অভিবাসী
হিসেবে আসতে গেলে উচ্চতর ডিগ্রি লাগে কর্ম-অভিজ্ঞতা লাগে। আর এসব অর্জন
করতে করতে অর্ধেক জীবনই প্রায় কেটে যায়। সেই মাঝবয়সে এই বিদেশ-বিভুঁইয়ে এসে
তারপরও এদেশের সংস্কৃতির সাথে খাপ খাইয়ে নিতে অন্তত বছর ছয়েক লাগে। তারপর
অভিবাসী একটা চাকরি হয়তো পায়। যে কোনো চাকরি মানেই গোলামি- গোলামের বৃত্তি
- দাসত্ব। এর উপর আছে এক ধরনের সামাজিক চাপ যা পরোক্ষভাবে আমাদেরকে অনবরত
ক্রীতদাস করে রাখছে। সমাজ বলছে বারো ঘন্টা করে কাজ করো, ব্যাংক থেকে টাকা
ধার করে বাড়ি কেনো, মর্টগেজ দিতে প্রয়োজনে আরও একটি চাকরি করো। তারপর দিনের
অধিকাংশ সময় বছর তিরিশেক একই অফিসকক্ষে কাটিয়ে সাধের বাড়িতে প্রতিরাতে শুধু
ক্লান্তি আর অবসাদের ঘুম ঘুমাতে আসো। মোটামুটি এইতো সাধারণ অভিবাসীর
জীবনযাপনের ধরন। আমি এই ধরনটাকে গ্রহণ করতে পারিনি। আমি মুক্তি চেয়েছি।
বেঁচে থাকার জন্য যতটুকু লাগে তা আমি সেলফ-এমপ্লয়েড হয়েই অর্জন করতে পারি।
তাছাড়া বাড়তি বিষয়-আশয়ের প্রতি আমার কোনো মোহ নেই। ইচ্ছে হলে আমি পাহাড়
চূড়ায় রাত কাটাতে চাই, ইচ্ছে হলে নদীর তীরে, ইচ্ছে হলে কানাডায়, ইচ্ছে হলে
আমেরিকায়।
গল্প করতে করতেই অনেক রাত হয়ে এল। শিহাব ভেতরবাড়ির বিছানা লিন্ডাকে ছেড়ে
দিয়ে চালকের এবং যাত্রীর আসন দুটো জোড়া লাগিয়ে নিজের জন্য বিছানা তৈরী করল।
উইন্ডশিল্ড দিয়ে তখন দেখা যাচ্ছে দশ-পনেরোটা খ্যাঁকশেয়াল দাঁড়িয়ে তাদের
আরভির দিকে তাকিয়ে আছে। মুচকি হাসলো শিহাব। মিনিট দশেক পর খ্যাঁকশেয়ালগুলো
চলেও গেলো।
সকালে লিন্ডার ঠেলাঠেলিতে শিহাবের ঘুম ভাঙল। লিন্ডা তার নিজের পোশাক পরে
নিয়েছে। দুজনের জন্য কফিও বানিয়েছে। লিন্ডা অনুরোধ করল তাকে তার বাড়িতে
পৌঁছে দিতে। খুব দূরে নয়। সুন্দর দোতলা বাড়ি। আরভি থেকে নেমে সে শিহাবকে
অনুরোধ করল তার সাথে যেতে। লিভিং রুমে ঢুকতেই শিহাব দেখতে পেল ক্যাথরিন আর
তার বয়ফ্রেন্ডকে। কেউ অবশ্য কোনো কথা বলল না। সাধারণ অভ্যর্থনাটুকুও নয়।
অদ্ভুত এক পিনপতন নীরবতা। কিছুক্ষন পর লিন্ডা ফিরে এল। তার হাতে একটা
স্যুটকেস। ক্যাথরিন নীরবতা ভঙ্গ করে লিন্ডাকে বলল: কোথায় যাচ্ছ? উত্তরে
লিন্ডা বলল: কোথাও নয়, তবে আমি যাচ্ছি জীবনে প্রথমবারের মতো বিয়ে করতে।
'বিয়ে করতে' শব্দ দুটো এতই জোর দিয়ে উচ্চারণ করল লিন্ডা যে শিহাব ঘটনার
আকস্মিকতায় ঘাবড়ে গেল। লিন্ডা শিহাবের হাত ধরে টেনে বাইরে নিয়ে এল। লাজুক
হেসে ক্ষমা চেয়ে নিয়ে বলল: কিছু মনে করেননি তো? মিথ্যেটা বলতে হল। আমাকে
অল্প কিছুদিন থাকতে দেবেন আপনার সাথে?
শিহাব কিছু বলল না। লিন্ডার স্যুটকেস ট্রাঙ্কে তুলে দিয়ে সে বসল চালকের
আসনে, লিন্ডা যাত্রীর আসনে। ব্রিমলি রোড ধরে একটু যেতেই দেখা গেল হাইওয়ে
চারশো-একের পূর্ব-পশ্চিম দুই ৱ্যাম্প। যে কোনো দিকেই চলে যেতে পারে শিহাব।
শিহাবের ঠিকানা রাস্তা-ঘাট-ঘর-বাড়ি নয়। গোটা পৃথিবীই তার একমাত্র ঠিকানা ।
আত্মহত্যা
জয়া চক্রবর্তী সোমা
বিপাশা কুয়োয় ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছে!জলজ্যান্ত মেয়েটার সাথে সকালেও তো দেখা
হয়েছিল কতজনের।হনহন করে বেরিয়ে গিয়েছিল বাড়ি থেকে।তারপর কোচিং এ সেখানেও দেখা
হয়েছিল।অন্যদিনের থেকে অন্যরকম লাগছিল।সব অংক ভুল হয়ে যাচ্ছিল।অন্যমনস্কের মত
কলেজের করিডোরেও কতজন হাঁটতে দেখেছে ওকে।তারপর? তারপর আর কেউ তেমন খেয়াল করে
নি।কখন বাড়ি ফিরল? কখন বাড়ির পিছনের কুয়োর কাছে গেল আর কখনই বা ঝাঁপ দিল
মেয়েটা?
পাথর হয়ে গেছেন শশাংকবাবু।মেয়েটা তার আর নেই।কোত্থাও নেই।কিন্তু কেন নেই কেউ না
জানুক তিনি তো জানেন।মা মরা তার অভিমানী মেয়েটা যে বড় জেদী ছিল।বলেছিলেন ঋষি
বলে ওই হাড় হাভাতে ছেলেটার সাথে বিয়ে দেবেন না।মেয়েও জেদ ধরে ছিল।বিয়ে করলে
ওকেই বিয়ে করবে।রাগের মাথায় বলেছিলেন-"ওই রাস্কেলটার নামের সিঁদুর সিঁথিতে পরা
তোমার মুখ দেখা আর তোমার মরা মুখ দেখা আমার কাছে সমান।"বিপাশাও বলেছিল-"এত বড়
কথা যখন বললে তখন ধরে নাও সেই মরা মুখই তোমায় দেখতে হবে।"হাহাকার করে কাঁদতে
থাকেন শশাঙ্ক। তার রাগের কথাগুলোই শুনল বিপাশা...মনের কথাটা বুঝল না।
খবরটা কানে আসার পর থেকে যেন কেমন হয়ে আছেন বিষ্ণুস্যার।আরো দুটো ব্যাচ ছিল।
ছুটি দিয়ে দিলেন।শরীরটা কেমন অস্থির অস্থির লাগছে।আজ সকালেই মেয়েটাকে মাত্রাতীত
বকেছেন তিনি।আসলে প্রেসারটা আজকাল ঠিক থাকে না।তার মধ্যে সব জানা জিনিস যদি কেউ
ভুল করে....
কিন্তু তার বলা কথার ছলে "তোমার ডুবে মরা উচিত" কথাটাকে এতটা সত্যি ভেবে বসবে
মেয়েটা এ যে তিনি স্বপ্নেও ভাবতে পারেন নি।হায় ভগবান মেয়েটা যে তাকে বাবার মতই
দেখত।তাই কি তার জন্যই.....
ঋষি ব্লেডটা নিজের কব্জিতে ঠেকায় একবার।চোখ বন্ধ করে চেষ্টা করে যদি টানতে
পারে।কিন্তু পারে না। কাঁপা হাতে অসহিষ্ণুর মত ছুঁড়ে ফেলে ওটা। তারপর বন্ধ ঘরের
কোনে জড়সড় হয়ে বসে নিজের হাঁটুতে মুখ গুঁজে দেয়।তার জন্য আজ বিপাশা নিজেকে শেষ
করে দিল। শুধু তার ভুলে।পিউ এর যে তার ব্যাপারে ক্রাশ আছে এটা তো সে অনেক আগে
থেকেই জানত।শুধু সে কেন।বিপাশাও জানত।কিন্তু এর আগে তো কোনদিন পাত্তা দেয় নি
সে।তবে আজ কি হয়ে গেল!ফাঁকা রুম,বাইরে ঝিপঝিপ বৃষ্টিতে পিউ যখন এত কাছে এসে
ঠোঁট নিয়ে এল ঠোঁটের কাছে....কয়েকটা মুহুর্ত।আর তখনই দরজায় এসে দাঁড়াল বিপাশা।
বোবা কান্নায় ভেঙে পরে ঋষি।কেন বিপ্স কেন?আমার মত একটা খারাপ ছেলের জন্য তুই
কেন.....
সেদিন বিকেলে কলেজ থেকে রিক্সা নিয়ে ফিরেছিল বিপাশা।হেঁটেই ফিরতে পারত।কিন্তু
গা ঘিন ঘিন করছিল,কান মাথা জ্বলছিল।বাড়ি এসে অনেকক্ষণ বসে ছিল ঘোরের মধ্যে
নিজের ঘরে। তারপর একসময় ওঠে।স্নান করে অনেকক্ষণ ধরে।কেমন হালকা বোধ হয়।হঠাৎই
মনে হয় ভালোই হয়েছে।ঋষির জন্য বাবা কষ্ট পাচ্ছে।যে বাবা মা মরে যাবার পর মাএর
মত করে তাকে মানুষ করেছে একটা বেইমান ছেলের জন্য সেই বাবাকে আর কষ্ট দেবে না
সে।বাবা রাতে ফিরলে ক্ষমা চাইবে।তার জীবনটা নতুন করে শুরু করবে।বিষ্ণুস্যারের
কতখানি আশা তার উপর।কত ভালোবাসেন তাকে স্যার।ওই ঋষির কথা ভাবতে ভাবতেই সব অংক
ভুল হয়েছে।আজ সব অংক ঠিক করবে ও রাতে।কাল গিয়ে দেখাবে।ভালোই হয়েছে।পিউ তো ঋষিকে
কত ভালোবাসে।আজ নতুন তো নয়।এতো শুরু থেকে সবাই জানে।ওর সাথে ঋষিও ভালোই
থাকবে।এত কম্লিকেটেড জীবন সত্যি ভালো লাগছে না।মাথাটা ধরেছিল।বাগানে এসেছিল
বিপাশা।মাথায় একটু হাওয়া লাগুক।আনমনে হাঁটতে হাঁটতে কখন এসে পরল কুয়োর
কাছে।ছোটবেলায় মালি কাকা ভয় দেখাত এর ভিতর রাক্ষস আছে।উঁকি দিলে দেখা যায়।ভয়
বিপাশা উঁকি মারে নি কখন।কিন্তু আজ একটু ঝুকলো।আর ঠিক সেইসময় কানের ঝুমকোটা
খুলে পরে যাচ্ছিল।কোনমতে ওটা ধরতে ঝুঁকে.......
সব শেষ।কেন করল এটা যে বলতে পারত তার দেহ এখন পুলিশের মর্গে।পুলিশ অবাক হয়ে
ভাবছে কোন সুইসাইড নোট যদি....
.
-নাস্রীন জেরিন সুলতানা
আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে ঠিক করলাম এই আষাঢ়ে কক্সবাজার পিকনিকে যাব।
যথাসময়ে চলেও গেলাম। সেখানে একজন দৈত্যর সাথে পরিচয় হলো। সেও বন্ধুদের
সাথে কক্সবাজার পিকনিকে এসেছে। সে এবং তার বন্ধুদের সাথে আমাদের ভালো
বন্ধুত্ব হয়ে গেল। তার থেকে জানতে পারলাম তার কিছু বন্ধু এসেছে সমুদ্রের
তলদেশ থেকে আবার কিছু এসেছে আকাশের উপর থেকে। তার বাড়ি ও আকাশের উপর। এত
ভালো বন্ধুত্ব হয়ে গেল যে আমাদের তার বাড়ি বেড়াতে যাওয়ার প্রস্তাব দিল।
এত সহজে এবং বিনে পয়সায় আকাশ ভ্রমণের লোভ ছাড়তে পারলাম না। তাই সবাই
রাজি হয়ে গেলাম। দৈত্যর পিঠে চড়ে সবাই চলে গেলাম আকাশে সেখানে আমরা চাঁদে
গেলাম।মঙ্গল গ্রহে গেলাম। এভাবে বুধ, শুক্র, বৃহস্পতি, শনি সবকটি গ্রহ ঘুরে
দেখলাম। কিছু ধূমকেতুর ভিতরও ঘুরলাম। তারপর যেই আমরা সূর্যের ভেতরে যাবো
দেখি প্রচণ্ড তাপ ও গরমে অসহ্য হয়ে গেছি।অন্যদিকে অন্ধকার হয়ে প্রচন্ড
জোরে বাতাস ও শিলাবৃষ্টি হলো।অন্ধকারে কিছুই দেখতে না পেয়ে সবাই সমুদ্রে
লাফ দিলাম। সমুদ্রবাসী দৈত্য বন্ধুদের সাথে সমুদ্রের তলদেশে ঘুরে বেড়ালাম।
সামুদ্রিক প্রাণীদের সাথে পরিচয় করলাম। অনেক মনি মুক্তা সংগ্রহ করলাম।
ঘুরতে ঘুরতে এক জায়গায় দেখি মাছ দের কনসার্ট হচ্ছে। সেখানে অনেক ডুবরীও
কনসার্ট দেখছে। আরেক জায়গায় দেখি মাছদের ফ্যাশন শো হচ্ছে সেখানে
দাঁড়িয়ে আমরা ফ্যাশন শো দেখছি তো দেখছি। এমন সময় জেলেরা ট্রলার থেকে জাল
ফেলল। আর অমনি আমরা সবাই জালে ধরা পড়ে ডাঙায় উঠে আসি।