টরন্টো, ২৬শে এপ্রিল, ২০২১, নভো সংখ্যা ১৯ 
              
হোমপেজ সম্পাদকীয় পাঠক পরিষদের কথা কবিতা ছোট গল্প ধারাবাহিক পাঠাগার আর্কাইভ লেখক পরিচিতি সাহিত্য সংবাদ বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও প্রকৌশল যোগাযোগ আবৃত্তি

কার্তিকের কুয়াশা

কবিতার পাতা

স্বপ্নের শবাধার

 

~ ফিরোজা হারুন
স্বপন দেখিনু এক
রজনীর শেষে
কে যেন ডাকিছে মোরে
বাতায়নে এসে
ওঠো ওঠো, চেয়ে দেখ,
নরম চাঁদের আলো
দূর করে দিয়ে গেছে,
জগতের সব কালো।
ঐ দেখি –
পৃষ্ঠদেশে একজন বহিছে
সাদা শবাধার
:কেন বহিছ শবাধার? পাওনি কো কিছু আর?
শুভ্র চাঁদনী রাতে, শুভ্র শবাধার,
নিস্তব্ধ চারিধার
সময় পাইনি তার
মুখাবয়ব দেখিবার!
শুধালাম তারে – কোন পরপারে
কি নিয়ে চলেছ পথিক কোন ঠিকানায়?
: উন্মুক্ত করিয়া দেখ কে যায় কোথায়!
সাদা জোছনা, সাদা শবাধার,
সাদা চরাচর,
খুলে দেখি সাদা শব,
নিদ্রায় কাতর।
চম্‌কে উঠি, পিছে হটি,
এ যে চেনামুখ!
সারাটি জীবন দেখেছি যে তারে,
পেয়েছি যে কত সুখ!
শুধাই তাহারে পুনঃ –
কে তুমি? কেন তারে নিয়ে যাও
কোন সুদূরে?
:আমিই তুমি, তুমি যে আমি,
চিনিলে না মোরে?
চমক ভাঙ্গিল মোর, ঘন তমসার ঘোর,
মোর চারপাশে
আমার শব বইছি, নিজেই আমি
অস্তাচলের দেশে।


পরিবর্তন
- তাপস কুমার দাস

আমি বুঝে নেবো
আমার যন্ত্রনা গুলো ।
আমি দেখে নেবো
আমার ক্ষত গুলো ।
আমি জেনে নেবো
আমার অজ্ঞানতা ।
আমি শিখে নেবো
আমার ভুল গুলো ।
আমি মিলিয়ে নেবো
আমার অংক গুলো ।
আমি বুঝিয়ে দেবো
আমার হেঁয়ালি গুলো
আমি খুঁজে নেবো ।
আমার দোষ গুলো
আমি ঠিক করে নেবো
আমার ত্রুটি গুলো ।
সব কিছুই আমি করবো তোমার জন্যে ---
কিন্তু তুমি কি পারবে থাকতে?
এই বদলে যাওয়া আমির সাথে???

 

নিস্তব্ধ আমি
শাহনাজ শারমিন

ফাগুন এসে হারিয়ে গেছে সেই কবে।
অভিমান আর অবহেলায়,
শুকিয়ে গেছে বাগানের ফুল।
এই বাগান আর আমি,
দুটোই তোমার কাছে আজ অবহেলিত।
আজো মনে আছে,
সমুদ্রের তীর ধরে হাঁটছিলাম দুজন।
দুরে একটা দাঁড়কাক,
বড় একটা ঝিনুককে খুবলে খাচ্ছিলো,
আমি বললাম, ওতে দামী মুক্তো আছে।
তুমি বললে,ওর চেয়েও দামী তুমি
এই আমার কাছে।
দূরে একটা ঝর্ণা দেখে বলেছিলাম
তুমি কি যাবে,আমাকে নিয়ে ওখানে।
তুমি বললে,তোমাকে নিয়ে অবলীলায়
পাড়ি দিতে পারি সাত সমুদ্র,
যদি তুমি থাকো পাশে।
ঝর্ণার কান্না দেখে বললাম,
যদি কখনো এই কান্না আমার চোখে ঝরে।
তুমি বললে,সেদিন হবে আমার জীবন অর্থহীন।
তারপর কেটে গেছে বহু কাল,
কতো কান্নার অশ্রু গড়িয়ে পড়েছে
দুচোখের কোণ বেয়ে।
প্রতিটি রাতের নিঃসঙ্গতায় দুমড়ে মুচড়ে দিয়েছে
আমার একাকিত্বের প্রতি প্রহর।
আজ আমি একা বড়ই একা।
নিঃসঙ্গ আর নিস্তব্ধতায়,
শুধু আমি, নিস্তব্ধ আমি।।।

 

 

একাকী।
গোলাম কিবরিয়া

অন্ধ হয়েছে চোখ, সারা দেহ পোড়া ।
হৃদয় ভেঙ্গেছে কবে লাগেনিতো জোড়া ।
জিজ্ঞাসি জনে জনে, ভুলে গেছি কোন ক্ষণে,
পৃথিবী আঁধার হলো জান নাকি কেউ?
কোন আগুন ফুলবনে ,আর এই দেহ মনে,
ঢেলেছিলো আচানক দহনের ঢেউ?

বাতাসের রণপায়ে ,হেঁটে যাবো দূর গাঁয়ে,
যেথা আলো চুমু দেয় আঁধারের চোখে ।
ফিরে ফিরে দেখে বাঁয়ে ,দেবো পাড়ি কোন নায়ে ,
যে কেবল গেছে শুধু আলোকের লোকে !

ভেবে যাই মাঝে মাঝে, কিছু কথা প্রাণে বাঁজে ,
আলোকের যাত্রীরা পেয়েছে কি সব ?
আঁধারের ভাঁজে ভাঁজে, আছি ডুবে সব কাজে,
কান পেতে শুনি বসে পৃথিবীর রব

পুড়ে গেছে দেহতরু ,দহে গেছে অন্তর,
একাকী আঁধার দেশে ঘুরে মরি মিছে ।
জীবন হয়েছে মরু, সবাই করেছে পর ,
পলাতক দেহছায়া নেই আর পিছে ।

 

সন্ধ্যা


সাইদুজ্জামান


সস্তা সুখের চেয়ে আমি দুর্লভ দুঃখ ভালোবাসি,
একলা ছিলাম, একলা আছি, বেদনার নোনাজলে ভাসি।
বিকেলের আলো শেষ হয়ে এলে সন্ধ্যার কালো,
খুব লেগেছিলো ভালো।
দিনের আর রাতের বিশালতায় সে আর কতক্ষন!
দুর্লভ এক দুঃখ সততই বিক্ষত করে গেছে মন।
কিছু ক্ষত আর কিছু দুঃখের স্মৃতি ছাড়া কে-ই বা কী পায়
জীবন খুব দৌড়-ঝাঁপ করে অবশেষে মৃত্যুকে চায়।
এভাবেই দিন যায়, রাত যায়, শুধু সন্ধ্যার মৃদু চমক,
বুকের ভেতর জ্বালায় হাজার আলোক।

 

টরন্টো, এপ্রিল ১৩, ২০২১