টরন্টো, ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১, নভো সংখ্যা ১৭
              
হোমপেজ সম্পাদকীয় পাঠক পরিষদের কথা কবিতা ছোট গল্প ধারাবাহিক পাঠাগার আর্কাইভ লেখক পরিচিতি প্রবন্ধ বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও প্রকৌশল যোগাযোগ আবৃত্তি

কার্তিকের কুয়াশা

লেখক পরিচিতি


হাফিজ আহমেদ



লে. কর্নেল ডাঃ হাফিজ আহমেদ, পেশায় চিকিৎসক। আর্মি মেডিকেল কোরের একজন দক্ষ অফিসার। প্রথমে আজাদ কাশ্মীরে, পরে পাকিস্তানে, পরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী থেকে তিনি লে. কর্নেল হিসেবে চাকুরী থেকে অবসর গ্রহন করেন। সাহিত্য এবং কাব্যচর্চা তার সহজাত বৃত্তি। ‘বনফুলের’ মত ডাক্তার হয়ে তিনিও একজন সাহিত্য প্রেমিক। বাংলা বানানের উপর তিনি গবেষণা করেছেন। শুদ্ধ বানান এবং শুদ্ধ উচ্চারণের রীতির তিনি এদেশে একজন পথিকৃত। সহজ পদ্ধতিতে বাংলা বানান কিভাবে লেখা যায়, তার উপায় তিনি বহু রচনায় প্রকাশ করেছেন। শিক্ষিত সমাজকে সচেতন করবার জন্য বানান রীতির উপর প্রচুর সহজ নিয়ম বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় দীর্ঘদিন চিঠিপত্র কলামে এইচ. আহমেদ নামে প্রচার করেছেন। রম্য রচনায় তিনি সিদ্ধ হস্ত। প্রচার বিমুখ বলে তার লেখাসমূহ বই আকারে প্রকাশ হয়নি।

ফারজানা আক্তার 



জন্ম : মে ৫, ১৯৯২, কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি থানার চরমাহমুদ্দি গ্রামে। পিতা ফজলু প্রধান এবং মাতা রুশিয়া আক্তারের স্নেহছায়ায় বেড়ে উঠা।

শিক্ষা : কম্পিউটার সায়েন্সেস অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং স্নাতক করেছেন। বর্তমানে একটি আইটি প্রতিষ্ঠানে ওয়েব ডেভেলপার হিসেবে কর্মরত আছেন। পাশাপাশি সামাজিক উন্নয়ন মূলক কাজে নিয়োজিত রয়েছেন। ওমেন্সকর্নার নামের একটি সংগঠন নিয়ে বৃহৎ পরিসরে কাজ করে যাচ্ছেন।

ড. মোছা. ফেরদৌসী বেগম



ড. মোছা. ফেরদৌসী বেগম বর্তমানে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক। জন্মস্হান পাবনা। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর। শিক্ষাজীবনে গোল্ড মেডেলসহ সকল স্তরে শিক্ষাবৃত্তি লাভ করেন। ১৯৯৭ সালে বিভাগে যোগদান করেন। ২০০৬ সালে রাজাশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অণুজীববিজ্ঞানে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। ২০১০-২০১১ সালে ইউনিভার্সিটি পুত্রা ইমালয়েশিয়া থেকে পোস্টডক্টরেট করেন। তার গবেষণার বিষয় অণুজীবিয় এনজাইম, বায়োডিগ্রেডেশন, মাটি ও পানির অণুজীবিয় গুণাগুণ, খাদ্য ও পানির অণুজীবিয় নিরাপত্তা,খাদ্য ও পানিবাহিত রোগের জীবানু ও উদ্ভিদ রোগ নিয়ন্ত্রন, সিঙ্গেল সেল প্রোটিন, খাদ্য সংরক্ষণ ও উন্নয়ন। একটি রেফারেন্স বইসহ দেশ ও আন্তর্জাতিক জার্ণালে তার প্রকাশনা ৫০ এর অধিক। দেশে ও বিদেশে অনেকগুলো আন্তর্জাতিক সেমিনারে অংশগ্রহন ও প্রবন্ধ উপস্হাপন করেছেন। বহুসংখ্যক গবেষণা প্রকল্প ও এমএস, এমফিল, পিএইচডি গবেষণা তত্বাবধায়ন করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের হল প্রোভোস্টসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বও পালন করেছেন। তিনি অনলাইনে বিভিন্ন সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন প্রোগ্রামেও অংশগ্রহণ করেন। তার স্বামী প্রফেসর ড. মো. সাইফুল ইসলাম রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষক ও একমাত্র সন্তান মাইশা ফারজানা রিয়া। তার শখ বিজ্ঞান ও সাহিত্য বিষয়ক বইপত্র পাঠ করা, ভ্রমন করা, লেখালেখি ও গানশুনা। শখের বশে কবিতা লেখা যা এখন নেশা। ইতিমধ্যে তার কবিতা বেশ কয়কটি সাহিত্য বিষয়ক অনলাইন পেজে সেরা সম্মাননা লাভ করেছে।

হোসনা খানম



হোসনা খানম, ঢাকা মিরপুর -১২,বয়স -৩৮,গৃহিণী।

শায়লা আজীম



শায়লা আজীম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করেছেন। বর্তমানে নিউইয়র্ক শহরে বাস করছেন। তিনি দীর্ঘ ২৩ বছর ধরে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের নিয়ে কাজ করছেন। এই বিষয়ে তিনি অনেক পড়াশুনা করেছেন এবং তার স্বীকৃতি স্বরূপ অসংখ্য সনদপত্র অর্জন করেছেন। বাংলাদেশ এবং উত্তর আমেরিকা সহ বিশ্বের প্রায় চল্লিশটি দেশে বিভিন্ন প্রকল্পের সাথে প্রত্যক্ষভাবেই শায়লা আজীম জড়িয়ে আছেন। তাঁর এই মহৎ কাজের জন্য নিউয়র্ক মহানগরীতে তিনি সকলের শ্রদ্ধাভাজন।  

রওশন হক 


লেখক ও সাংবাদিক। রওশন হকের জন্ম হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাটে। লেখাপড়া করেছেন চট্টগ্রামে। ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি, চট্টগ্রাম থেকে এম বি এ করেছেন  স্বামীর উৎসাহ এবং সহযোগিতায়। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক করেছেন নাসিরাবাদ গার্লস স্কুল এন্ড কলেজ থেকে।  একই প্রতিষ্ঠান থেকে বিজ্ঞান বিভাগে স্নাতক। ব্যাংকার হিসাবে ১২ বছরের কর্মজীবন শুরু ১৯৯৭ সালে সাউথ ইস্ট ব্যাংকে। পরে কাজ করেছেন প্রিমিয়ার ব্যাংকে (২০০২-২০১৫)। স্বামী ও দুই মেয়ে নিয়ে ২০১৫ থেকে নিউইয়র্কবাসী। ছাত্রজীবন থেকেই সাহিত্যানুরাগী রওশন এখন নিউইয়র্কের সাপ্তাহিক 'প্রথম আলো, উত্তর আমেরিকা'য় নিয়মিত রিপোর্টিংয়ের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় ছোটগল্প সহ নিয়মিত নানা ধরণের লেখালেখি করছেন। 



শিউলী জাহান


জন্ম: ১০আগস্ট। পৈতৃকসূত্র: মানিকগঞ্জ জেলা, সিঙ্গাইর থানা, পারিল গ্রাম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর।
সাংবাদিকতা দিয়ে পেশাজীবন এবং লেখালেখির জগতে প্রবেশ। জড়িত ছিলেন বেশ কিছু সাপ্তাহিক ও পাক্ষিক পত্রিকায়। প্রকাশিত হয়েছে দু’টি কাব্যগ্রন্থ –
আশার বাগানে নীল প্রজাপতি; দ্রোহের সাত রঙ। কবিতাই তার আরাধনা। কবিতার নিগড়ে বেঁধে থাকতেই পছন্দ করেন। তবে সব ধরণের লেখা ও পড়ার প্রতি আগ্রহী যাকিছু মন ও হৃদয়কে আন্দোলিত করে, ভাবনার সাগরে ঢেউ তোলে। প্রকৃতি ও মানুষ তার লেখার মূল বিষয়। বর্তমান নিবাস কানাডার টরন্টো শহরে। বর্তমানে কানাডার একটি প্রতিষ্ঠানে বিশ্লেষক (Analyst) হিসেবে কর্মরত আছেন।



ফিরোজা হারুন



জন্মঃ জানুয়ারি ১, ১৯৪৪, ময়মনসিংহ জেলার ত্রিশাল থানার হরিরামপুর গ্রামে। স্নেহময় পিতা জনাব আব্দুস সোবহান বিশ্বাস ও মাতা জুবাইদা খাতুনের ছায়ায় বেড়ে ওঠা।শিক্ষাঃ ময়মনসিংহ বিদ্যাময়ী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়। তারপর টাঙ্গাইলের কুমুদিনী কলেজ হতে বি.এ. পাশ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে ইতিহাসে এম. এ. সমাপ্ত করে ময়মনসিংহ টিচার্স ট্রেনিং কলেজ ফর উইমেন থেকে বি. এড. ডিগ্রী অর্জন এবং ঢাকায় আদমজী ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুলে যোগদান। এক কন্যা ও এক পুত্র সন্তানের জননী ফিরোজা হারুনের সাহিত্য অঙ্গনের অগ্রযাত্রার মূলে প্রেরণা যুগিয়েছে তাঁর স্বামী ডাঃ মোহাম্মদ হারুন। তাঁর প্রথম উপন্যাস 'জীবনেরে কে রাখিতে পারে' সাপ্তাহিক রোববারে ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশের পর ১৯৯৭ সালে গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়েছে। আর আন্তর্জালে প্রকাশ পেয়েছে ২০০৮ সালে। দ্বিতীয় প্রকাশিত উপন্যাস ২০০০ সালে 'সুখের লাগিয়া'। ২০০৮ এ প্রকাশিত হয়েছে আরো ছয়টি গ্রন্থ। কিশোর সংকলন -মেঘরাজা রোদরাজা, কাব্য সংকলন-নিশি লোর, উপন্যাস-প্রতীক্ষা, তিন পুরুষের গল্প, স্মৃতির দুয়ারে এবং গল্প ও প্রবন্ধ সংকলন-ছিন্ন বীণার তার। লেখালেখির পাশাপাশি তিনি সমাজকল্যাণ মূলক কাজে নিয়োজিত রয়েছেন। প্রতিষ্ঠা করেছেন তাঁর মায়ের স্মৃতিস্মরণে একটি প্রাইমারি স্কুল তাঁরই নিজ গ্রামে।


মধুবন্তী আইচ



জন্ম ২৯ মে, কোলকাতায়। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তুলনামূলক সাহিত্যে ডিগ্রি অর্জন করেন। বর্তমান নিবাস গুজরাটের ভাদোদরা শহরে।



সাগর জামান


কবি,প্রাবন্ধিক,সাংবাদিক,শিল্প সমালোচক। জন্ম২৯ এপ্রিল১৯৭৪ মাগুরা । তার পিতার নাম এ কে এম হামিদুজ্জামান। মাতার নাম বেগম মাহমুদা মির্জা। সাগর জামান শৈশব থেকে লেখালেখি করছেন।
পারিবারিক পরিমণ্ডল থেকে তিনি পেয়েছেন সাহিত্যের খোঁজখবর নেয়ার পরিবেশ । বড় ভাইদের লেখালেখি দেখে তার এই আগুনে হাত পোড়ানোর সুত্রপাত। ছেলেবেলা থেকেই লেখালেখি শুরু করেন তিনি। তবে নব্বই দশকের শুরু থেকে সাগর জামানের নিবিড় সাংবাদিকতার সুচনা । সমকালের সমাজ বাস্তবতার নিরিখে নান্দনিক সমালোচনা স্পষ্ট কথন বিশ্লেষণধর্মী লেখালেখির মাধ্যমেই তিনি এই বুদ্ধিবৃত্তিক জ্ঞানভিত্তিক পেশাকে চলমান রেখেছেন।তিনি বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে লেখালেখি করেন। দৈনিক আজকের কাগজ,দৈনিক বাংলাবাজার পত্রিকা,দৈনিক যায়যায়দিন,দৈনিক ভোরের কাগজ,দৈনিক জনকণ্ঠ,প্রভৃতি পত্রিকায় বিস্তর লিখেছেন। সম্পাদনা করেছেন আলোকের এই ঝর্ণাতলে,অমল ধবল দিন,ফিরে আসি মাটির টানে,নীল আকাশ সোনালি রৌদ্র প্রভৃতি সাহিত্য কাগজ। মফস্বলে থেকে লিটল ম্যাগাজিন প্রকাশনার মাধ্যমে তিনি অনেক নামী কবি, লেখক,সাহিত্য সমালোচকদের বাহবা কুড়াতে সক্ষম হয়েছেন । সৃজনশীল প্রঞ্জার প্রতিফলন ঘটেছে তার লেখায়। তার সম্পাদনায়। মফস্বল থেকে প্রকাশিত সাহত্য কাগজে তিনি দেশের খ্যাতিমান কবি সাহিত্যিকদের যুক্ত করেছেন সাফল্যের সাথে। মফস্বলের প্রতিকূল পরিবেশে লিটল ম্যাগাজিন চর্চায় তিনি ছিলেন অগ্রগণ্য। সৃজনশীল রচনার পাপাশাশি সমালোচনামূলক লেখালেখিতেও তিনি স্বচ্ছন্দ বোধ করেন। স্বকীয় ভাষা বিন্যাস,প্রেমময় আবেগ, শিল্প সৌন্দর্যবোধ, প্রকৃতি, বাস্তবতা, মানবিক সামাজিক সব সংকট জীবনবোধ, দেশপ্রেম, স্বাধীনতার চেতনা, তার লেখালেখিতে পরিলক্ষিত হয় নানাভাবে। সাহিত্যের সব ক্ষেত্রে তার বিচরণ তার লেখক সত্তাকে মহিমান্বিত করেছে। তিনি যেমন গদ্য রচনার ক্ষেত্রে প্রশংসিত হয়েছেন তেমনি কবিতা রচনায় দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। তার বেশির ভাগ কবিতা নারী প্রেমের আবেগ অনুভূতি সংলগ্ন।
বৈপ্লবিক সময়কে যারা সাহিত্যে ধারণ করেছেন তাদের ঐশর্যমণ্ডিত জগৎ, সৃষ্টিশীলতা নানাভাবে সুবিন্যাস্ত করেছেন সাগর জামান তার বিভিন্ন প্রবন্ধে। সমষ্টির সংকট সংগ্রামী চেতনা, প্রেম প্রবণায় তার লেখালেখির অনাবিল ভুবন হয়ে উঠেছে বৈচিত্র্যময় । সাগর জামানের প্রবন্ধ গ্রন্থ 'আলোর অনাবিল ভুবন 'পাঠক মহলে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে।
বাংলা সাহিত্যকে উর্বর করেছেন খ্যাতিমান কবি সাহিত্যিক। তাদের জীবন দর্শন, দিক নির্দেশনা ও ভাবনা সাগর জামান তার প্রবন্ধ গ্রন্থ "আলোর অনাবিল ভুবন" এ গভীর অনুসন্ধানে বিশ্লেষণ করেছেন। তার রচনা যুক্তি নির্ভর ও তথ্য সমৃদ্ধ। বলা যায় কাল পরিক্রমায় এ সব কবি সাহিত্যিকদের জীবনবোধ তরুণ প্রজন্মকে নতুনভাবে উদ্দীপ্ত করবে। সাগর জামান সহজ সরল ভাষায় তার রচনায় স্বদেশকে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে যুক্ত করেছেন।



এ কে এম সাইদুজ্জামান


জন্ম ১২ই আগস্ট বাংলাদেশে। শিক্ষা সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং কানাডায়। সোভিয়েত ইউনিয়নের আজেরবাইজান সিভিল এঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট থেকে প্রথম সিভিল এঞ্জিনিয়ারিং এ ডিগ্রি, আজেরবাইজান তৈল ও রসায়ন ইনস্টিটিউট থেকে তাপ এবং পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে জল শোধনের উপর গবেষণার জন্য রুশ ফেডারেশন প্রদত্ত পি এইচ ডি ডিগ্রি,কানাডার কনকোর্ডিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রথমে এনভায়রনমেন্টাল এঞ্জিনিয়ারিংএ গ্রাজুয়েট সার্টিফিকেট এবং সব শেষে সিভিল এঞ্জিনিয়ারিংএ পি এইচ ডি। বিদ্যালয়ে বিচরণ ঢের হয়েছে বিধায় এরপর থেকে বিদ্যালয় থেকে দূরে থেকেছি। বর্তমানে কানাডার অন্টারিও প্রভিন্সে অনুমতিপ্রাপ্ত লাইসেন্সধারী প্রকৌশলী। 

Diogenes the Cynic এর মতো ভাবতে ভালবাসি, "আমি এই পৃথিবীর নাগরিক ।" অবাস্তব ভাবনা বৈকি! যুক্তরাষ্ট্র এবং ক্যানাডার বিভিন্ন শহরে, এক বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছুদিন শিক্ষকতা এবং সিভল এঞ্জিনিয়ারিং পেশায় আমি সর্বদাই সাময়িক এক কর্মজীবী। সর্বদা সাময়িক আর চিরস্থায়ী বস্তুত একই বস্তু বলে বোধ করি । জীবিকা অর্জনের তাগিদে সিভল এঞ্জিনিয়ারিংয়ের নিরস কর্মকান্ড আমার জীবনে এক স্থায়িত্ব দখল করে ফেলেছে। সেই যৌবন থেকে ভেবেছি মিস্তিরিগিরি সাময়িক দুএকটি বছর করে পাকাপোক্ত ভাবে সাহিত্য জগতে ঢুকে পড়ব - বাস্তব তা হতে দেয়নি । আর সামান্য একটু বেশি সাহস থাকলে ভদ্র গোছের একজন লেখক হতে পারতাম হয়তো । ১৯৭৯ সালে প্রথম লিখেছি, ১৯৮০-১৯৮১ তে একালের নামকরা লেখকদের সাথে সেকালে সাহিত্যের দারুন আড্ডা দিয়েছি - এই স্মৃতিটুকু সম্বল করেই এই বুড়ো বয়সে সাহিত্যের পথে আমার এই বিলম্বিত যাত্রার শুরু । আমার সাহিত্য রচনা যাঁরা পছন্দ করেছেন, কাকতালীয়ভাবেই তাঁদের অনেকেই জীবনের কোনো এক সময় নিদারুন মস্তিস্ক বিকৃতির প্রমান রেখেছেন, আর এ ব্যাপারটাও ফলত আমাকে বেশ নিরুত্সাহিত করেছে । গোটা দুয়েক বই, ডজন খানেক রচনা আমার ছাপা হয়েছে - তবে তা সাহিত্যের নয়, বাংলা ভাষায়ও নয় । ইংরেজি এবং রুশ ভাষায় লেখা ওই রচনাগুলো । গোটা চারেক ছোট গল্প বাংলায় লিখিয়ে নিয়েছে আমার বন্ধুরা, তা ছাপানোর ব্যবস্থাও তাঁরাই করেছেন । পাঠকদের কেউ কেউ আবেগে মন্তব্য করেছেন সব কটি লেখাই নাকি শ্রেষ্ঠ । এরকম মন্তব্য আমাকে নিরুত্সাহিতই করেছে এতকাল । যদি সত্যিই আমার লেখাগুলো ভালো হয়ে থাকে তবে হয়তো পঞ্চম লেখাটি আর সেরকম ভালো হবে না ।

১ । কেন লিখি? পাঠকের অনুরোধের ঢেকি গিলি।

২ । আমার প্রিয় লেখক - বাংলা সাহিত্যে শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়, রচনা "কাগজের বউ"; ইংরেজি সাহিত্যে ফিলিপ রথ, রচনা "দ্য ডায়িং এনিম্যাল"; রুশ সাহিত্যে ইভান বুনিন, রচনা "ভালোবাসার ব্যাকরণ (грамматика любви)" । আমি নিজে খুবই খারাপ ধরনের পাঠক - কোনো রচনার বিষয়, কাঠামো, কৌশল, শব্দ নির্বাচন আমার মনে না ধরলে পড়তে ইচ্ছে করে না তা সে যত বড় লেখকের রচনাই হোক না কেন।

৩ । ইন্টারনেট বাংলা সাহিত্যকে অবশ্যই উন্নতির শিখরে পৌঁছে দেবে বলেই আমি বিশ্বাস করি । পাঠকের বিবেচনা শক্তি বাড়বে, ভালো লেখার ক্ষুধা-তেষ্টা বাড়বে - সৃষ্টি বাড়তে বাধ্য যখন তার প্রয়োজন তীব্র হতে থাকে ।

8 । বাংলা সাহিত্যের অতীত এবং ভবিষ্যত দু'কালই মারাত্মক উজ্জ্বল। বর্তমান কালটাই শুধু একটু বেশি সময় নিচ্ছে ভবিষ্যতের প্রস্তুতি নিতে।

৫। যে লেখক ভালো লিখতে পারেন তিনি বাধ্য লিখতে। না লিখলে তার শাস্তি হওয়া উচিত, হয়ও বটে। যে লেখক ভালো লিখতে পারেন না, তার উচিত লেখার লোভ সামলানো । বাংলা সাহিত্যে অধুনা নামকরা অনেক লেখকের স্থানে আমি থাকলে লেখালেখি স্থায়ী ভাবে বাদ দিয়ে দিতাম । বড় পাপ হয় যা তা লিখে পাঠকের হাতে দিলে, বড় পাপ হয় সাহিত্য, বিজ্ঞান বা প্রকৌশলকে শুধুই ব্যবসায় পরিণত করলে ।

৬ । বর্তমান প্রজন্মের কাছে আমার প্রত্যাশা? বর্তমান প্রজন্মকে আরও একটু স্থির, আরো একটু বিবেচক, আরো একটু প্রশিক্ষিত দেখতে পেলে ভালো লাগতো ।

৭ । একদিন লেখক হবার স্বপ্ন দেখেছিলাম - হতে পারিনি । অন্য অনেক কিছু লিখে লিখে জীবন কেটে গেলো, সাহিত্যের লেখা হলো না - হবে না - হয়তো যোগ্য নই ।