টরন্টো, ৪ঠা কার্তিক ১৪২৭ বঙ্গাব্দ, নভো সংখ্যা ১৩
              
হোমপেজ সম্পাদকীয় পাঠক পরিষদের কথা কবিতা ছোট গল্প ধারাবাহিক পাঠাগার আর্কাইভ লেখক পরিচিতি মার্জিনে মন্তব্য  যোগাযোগ আবৃত্তি

কার্তিকের কুয়াশা

সম্পাদকীয়

আমাদের কার্তিকের কুয়াশা সাহিত্য পত্র সবার চেনা না হলেও জীবনানন্দ ্ দাশের কার্তিকের কুয়াশা নিয়ে কবিতা বাঙালি মাত্রই জানেন। ‘যদি আমি ঝরে যাই একদিন কার্তিকের নীল কুয়াশায়/যখন ঝরিছে ধান বাংলার ক্ষেতে-ক্ষেতে ম্লান চোখ বুজে/যখন চড়াই পাখি কাঁঠালীচাপাঁর নীড়ে ঠোটঁ আছে গুজে/যখন হলুদ পাতা মিশিতেছে খয়েরী পাতায়/যখন পুকুরে হাঁস সোঁদা জলে শিশিরের গন্ধ শুধু পায়/শামুক গুগলিগুলো পড়ে আছে শ্যাওলার মলিন সবুজে-। ’

 

প্রকৃতিতে এখন রঙের সমারোহ। সবুজ গাছপালা গুলো ক্রমেই রঙিন হয়ে উঠছে। লাল,কমলা,হলুদ খয়েরি, হালকা, গাঢ় কত রং! রঙিন পাতা রা একসময় ঝরে ঝরে পড়ে গাছের নিচে। সে এক অপরূপ দৃশ্য। আমরা বলি 'ফল সিজন'। বাংলাদেশে এ সময়টা হেমন্ত ঋতু। হিম হিম কুয়াশার আড়ালে সূর্য লুকিয়ে থাকে। সূর্য উঠার পরে ঝকঝকে রোদে আনন্দ উৎসবে চলে কৃষকের ফসল তোলার গান।ঘরে ঘরে চলে নবান্নের উৎসব।
আমারাও ঠিক এই আনন্দ উৎবের সময়েই এবার "কার্তিকের কুয়াশা " প্রকাশ করছি।
এবারের "কার্তিকের কুয়াশা"র বিশেষত্ব হলো নিউইয়র্কের একঝাঁক লেখক -লেখিকার অংশগ্রহণ। যাঁরা ইতিমধ্যেই নিউইয়র্কে বেশ পরিচিত এবং জনপ্রিয় তাঁদের লেখনীর মাধ্যমে। বরাবরের মতোই আছেন কানাডা এবং পশ্চিমবংগের লেখক লেখিকারা।
অনেক বোদ্ধা লেখক এবং সমালোচকেরা সাম্প্রতিক সময়ের লেখকদের লেখার মান এবং লেখার ধরন -ধারণ পছন্দ করেন না। তাঁরা রীতিমতো শংকা প্রকাশ করেন! বাংলা ভাষা এবং সাহিত্যের রুগ্ন সময় বলেও অনেকে অভিহিত করেন। আমার কাছে অবশ্য ব্যাপারটা কখনোই নেতিবাচক মনে হয়নি। কারন আমি মনে করি সবাই সুযোগের সদ্ব্যবহার করছেন। একটা সময় ছিল যখন লেখা প্রকাশ করার জন্য লেখককে দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হতো।এখন বিষয়টি সম্পুর্নই বিপরীত। সবাই দু'হাতে লিখছেন, প্রকাশ করছেন বিভিন্ন মাধ্যমে। আর ফেসবুক তো আছেই। তবে সময়ই বলে দিবে কে থাকবে আর কে হারিয়ে যাবে। কারন সবাই কবি নয় কেউ কেউ কবি। তাই আমি সবার লেখার মাঝে আনন্দে অবগাহন করি। সাগর সেঁচা মুক্তো কিছুতো থাকবেই।
কোভিড -১৯ এর জন্য সারাবিশ্ব আজ বিপন্ন।এর প্রভাব সাহিত্য অঙ্গনেও স্পষ্ট। লেখক/লেখিকারা প্রচুর লিখছেন। কোভিড নিয়ে,বন্দী জীবনের অসহায়ত্ব নিয়ে। এই সময়ের যে অস্থিরতা সাহিত্যে তার আভাস স্পষ্ট।
করোনার হতাশাকে দূরে ঠেলে আমরা সামনে এগিয়ে যাচ্ছি। উদ্ভুত পরিস্থিতিকে সামলে আমরা প্রকৃতির রঙে রাঙিয়ে তুলছি আমাদের মনকে। একদিকে রঙিন প্রকৃতি অন্য দিকে হ্যালোইনের রঙ।।আমাদের "কার্তিকের কুয়াশা" র এবারের আয়োজন সবার মন খুশীর আনন্দে রাঙিয়ে তুলুক এই প্রত্যাশা রইল!

 

ফরিদা ইয়াসমিন , নিউ ইয়র্ক, ৪ঠা কার্তিক ১৪২৭ বঙ্গাব্দ