কার্তিকের কুয়াশা

 

বছর তিরিশ আগেও বাংলা সাহিত্যের পাঠক সাগ্রহে মেইলবক্স খুলে খুঁজতেন দেশ, বিচিত্রা বা ওরকম কোনো পত্রিকার সাহিত্য পাতা, খুঁজতেন সপ্তাহের ছোট গল্পটি বা উপন্যাস দেশে এবং প্রবাসে কথা সাহিত্যের সেকালের রচনা পাঠককে সত্যিই  তীব্রভাবে আকর্ষণ করত l যে কোনো লেখাই তখন পাঠকের কাছে পাঠযোগ্য মনে হত l আজ আর সেরকমটি নেই l পাঠক কে জিজ্ঞেস করে দেখুন কটা গল্প বা উপন্যাস তাঁদের ভালো লাগছে দশের ভেতর বড়জোর একটা l ছোট গল্প ভিষন ভাবে ব্যর্থ হচ্ছে পাঠককে আকর্ষণ করতে l আধুনিক লেখক আর আধুনিক পাঠকের ভেতর তৈরী হয়েছে অভূতপূর্ব এক ব্যবধান l কিসের এই ব্যবধান? লেখক কেন ব্যর্থ হচ্ছেন তাঁরই সমকালীন পাঠকের প্রত্যাশা মেটাতে?  আজকের লেখক যেভাবে লিখছেন তা ঠিক উনবিংশ বা বিংশ শতাব্দির লেখকের মত নয় l যেসব লেখা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে বারবার পঠিত হয়েছে তা বিশ্লেষণ  করলে দেখা যায় সেকালের লেখকদের লেখা অপেক্ষাকৃত সঙ্গতি বহন করত l কালজয়ী লেখকেরা বিষয়বস্তু এবং অর্থপূর্ণতা অন্বেষণ করে ফিরতেন: গল্পের যথাযথ এবং পরিশীলিত বিবরণ, মানুষ জন্মের সত্যিকার অর্থ কি তা অনুসন্ধান করা, পৃথিবীর উপর বিস্তৃত, অবারিত দৃষ্টিপথ, মানবপ্রকৃতি বিষয়ে বিস্তৃত জ্ঞান, এসবই সেকালের লেখায় একালেও বিশেভাবে দ্রষ্টব্য l

ভালো গল্পের ঘাটতির এই সময়ে ড: কৃষ্ণলাল সরকারের গল্পটি সত্যি খুব পাঠযোগ্য, খুব মনোহারী  l

এ সংখ্যায় যোগ করা হলো আবৃত্তি বিভাগ, কার্তিকের কুয়াশার পক্ষ থেকে এই অভিনব সংযোজনের জন্য কবি পার্থসারথি ভৌমিককে জানাই আন্তরিক কৃতজ্ঞতা l



চঞ্চল জামান
৭ অক্টোবর , ২০১২